ময়মনসিংহে জয় বাংলা চত্বর
রাকিবুল হাসান রুবেল, ময়মনসিংহ
🕐 ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০২০
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর চেতনা ছড়িয়ে দিতে ময়মনসিংহে নির্মিত হয়েছে ‘জয় বাংলা চত্বর’। গত বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উদ্বোধনের পর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে চত্বরটি। বিজয়ের ৪৯ বছর পর নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে দীর্ঘদিনের আকাক্সিক্ষত এমন চত্বরের দেখা পেল ময়মনসিংহবাসী।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নির্মিত এই চত্বরটি বুধবার সন্ধ্যায় উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। এর আগে জয় বাংলা চত্বর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, সহ-সভাপতি আমিনুল হক শামীম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, প্যানেল মেয়র-১ আসিফ হোসেন ডন, জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন কালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে এক আলোচনা সভায় এমন কাজের প্রশংসা করে মোবাইল ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি।
মসিক সূত্র জানায়, জয় বাংলা চত্বরে ৩০ ফুট উঁচু অবকাঠামোর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। তার পেছনে আছে সাতটি পামগাছ। সেগুলো সাত বীরশ্রেষ্ঠ স্মৃতি বহন করে। আর ভাস্কর্যের সামনে নয় ইঞ্চি করে রয়েছে ১৬টি পিলার-যা নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসকে বহন করে। এ ছাড়াও নয় হাজার বর্গফুটের এই চত্বরে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহন করা আরও কিছু স্তম্ভ। যেগুলো বঙ্গবন্ধুর জীবনী এবং মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও তুলে ধরা হয়েছে। এসব কারণে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয় বাংলা চত্বর’। সিটি মেয়রের পরিকল্পনাতে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে এ চত্বরের কাজ শুরু হয়। যার ভাস্কর শিল্পী অনুপম সরকার জনি।
অনুপম সরকার জনি আরো জানান, বেদির দুপাশে টেরাকোটার মাধ্যমে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ পর্যন্ত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে তুলে ধরার জন্য চত্বরে ফাইবার আর মার্বেল ডাস্ট দিয়ে ১৭টি শাপলা ফুল নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিকৃতির দুপাশে টেরাকোটার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের দৃশ্যপট ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
এই ভাস্কর শিল্পী আরও জানান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির ৩০ ফুট অবকাঠামোটি ৩০ লাখ শহীদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রতিকৃতির ডান প্রান্তে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্মরণীয় উক্তি, আর বাঁ-পাশে জীবনী। চত্বরের বাম পাশে রয়েছে সাতটি সিঁড়ি। সিঁড়ি দিয়ে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বোঝানো হয়েছে। আর ডান পাশের ছয়টি সিঁড়ি দিয়ে ছয়দফা আন্দোলনকে বোঝানো হয়েছে।
জয় বাংলা চত্বরের পরিকল্পনাকারী সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে এবং বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে ছড়িতে দিতেই চত্বরটি নির্মাণ করা হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেতনা সবার মাঝে ছড়িয়ে যাবে।