ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান
এম সুরুজ্জামান, নালিতাবাড়ী (শেরপুর)
🕐 ১২:০১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৭, ২০২০
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা বারমারী সাধু লিও’র খ্রিস্টান ধর্মপল্লী। প্রতি বছর এখানে অনুষ্ঠিত হয় তীর্থযাত্রা। প্রতি বছর অক্টোবরের শেষ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিনব্যাপী বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালিত হয়। সে হিসেবে এ মাসের শেষেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তীর্থযাত্রা। তবে করোনা মহামারীর জন্য শুধু শুক্রবার সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে এই উৎসবে দিন দিন দেশি-বিদেশি তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় তীর্থস্থানটিকে আন্তর্জাতিক মানের করতে উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্থাপন করা হয়েছে ৪৮ ফুট উঁচু মা মারিয়ার মূর্তি ও যীশুখ্রিস্টের দুটি বড় ভাস্কর্য।
বারমারী খ্রিস্টধর্মপল্লী সূত্রে জানা গেছে, ক্যাথলিক খ্রিস্টভক্তদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৮ সালে পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে এ তীর্থস্থানটি স্থাপন করা হয়। এ তীর্থস্থানের দুই কিলোমিটার পাহাড়ি টিলায় ক্রুশের পথ ও পাহাড়ের গুহায় স্থাপন করা হয়েছে মা-মারিয়ার মূর্তি। প্রতি বছর অক্টোবরের শেষ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার তীর্থ উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি হাজার হাজার খ্রিস্টভক্তরা আসেন। তীর্থ উৎসবে মহাখ্রিস্টযাগ, গীতি আলেখ্য, আলোর মিছিল, নিশিজাগরণ, নিরাময় অনুষ্ঠান, পাপ স্বীকারসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদী অনুষ্ঠিত হয়। এদিন খ্রিস্টভক্তরা পাপ মোচনে মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর মিছিলে অংশগ্রহণ করে। প্রায় দুই কিলোমিটার পাহাড়ি ক্রুশের পথ অতিক্রম শেষে মা-মারিয়ার মূর্তির সামনে সমবেত হন। সেখানে তারা তাকে ভক্তি শ্রদ্ধা জানান ও তার সাহায্য প্রার্থনা করেন।
আদিবাসী নেতা মি. লুইস নেংমিনজা বলেন, ধর্মীয় চেতনায় হাজার হাজার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রতি বছর বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালিত হওয়ায় বর্তমানে এটি আন্তর্জাতিক মহাতীর্থস্থানে রূপ পেতে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বারমারী ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত রেভারেন্ট মনিন্দ্র এম চিরান বলেন, এই তীর্থস্থানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পানি সরবরাহের ব্যবস্থা, শৌচাগার নির্মাণ, প্যান্ডেলের নিচের স্থান ও ক্রুশের পথ পাকাকরণ, তীর্থ যাত্রীদের আবাসন তথা থাকার ব্যবস্থা করা এবং পাহাড়ি ঢলের সময় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা একান্ত জরুরি।