জীর্ণতায় পড়ে আছে ঐতিহাসিক ভূইয়াবাড়ি
খন্দকার শাহিন, নরসিংদী
🕐 ১২:০৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২০
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন নরসিংদীর মাধবদীতে নুরালাপুর ইউনিয়নে আলগী গ্রামে পরিত্যক্ত তারিনী বাবুর ভূইয়াবাড়িতে ছিল মুক্তিবাহিনীর আস্তানা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
যুদ্ধ চলাকালীন আজকের এদিনে হানাদার বাহিনী সেখানে হামলা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধা তাইজ উদ্দিন পাঠান, আনোয়ার হোসেন, সিরাজ মিয়া, আওলাদ হোসেন, মোহাম্মদ আলী ও আ. সালাম মিয়াকে আটক করে। পরে একটি কাঁঠাল গাছে বেঁধে গুলি করে ও বেয়নেটের আঘাতে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক সেই স্থানটি পড়ে আছে জীর্ণতা নিয়ে। হচ্ছে না সংস্কার। আবর্জনা ঘিরে আছে চারপাশ। ছয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধার শহীদ হওয়া আজকে দিনকে ঘিরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও তারিনী ভূইয়াবাড়ির ঐতিহ্য রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।
সরজমিন ওই পুরনো বাড়ি ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় শত শতাংশের উপরে জমি পরিত্যক্ত পড়ে আছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ, একটি হাসপাতাল, এর মাঝে পুরনো দুটি ভবন ও নবনির্মিত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্বপ্নের কার্যালয়। যুদ্ধকালীন এখানে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অফিস হিসেবে ব্যবহার করছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
দৈনিক খোলা কাগজের সঙ্গে কথা হয় ওই এলাকার নুরাপুর ইউনিয়ন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল চৌধুরীর। তিনি জানান, তারিনী বাবু ভূইয়াবাড়ির চারপাশে প্রাচীর নির্মাণ করে দৃষ্টিনন্দন ও একটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, একটি কমপ্লেক্স নির্মাণ বহুদিন ধরে এ দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধারা।
গত মাসের ২৭ সেপ্টেম্বর নরসিংদী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অফিসকক্ষ নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এখানে একটি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ ও পুরনো বাড়িটি যেন পুনঃসংস্কার করে পুরনো ওই ভবনটি জাদুঘরে পরিণত করা হয় সরকারের কাছে আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সেক্টর কমান্ডার ফোরাম-৭১ নরসিংদী জেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালিব পাঠান জানান, আলগী তারিনী বাবুর ভূইয়াবাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচর্যা, জমির পরিমাণ সংরক্ষিত করে প্রাচীর নির্মাণের জন্য নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন।
পুরনো এই ঐতিহ্যকে পুনসংস্কার ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নির্মাণের দাবি জানান তিনি।