ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ময়মনসিংহে উদ্বোধনের অপেক্ষায় সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প

রাকিবুল হাসান রুবেল, ময়মনসিংহ
🕐 ১১:০১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০

ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ‘সুতিয়াখালী ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প’ বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে অক্টোবরে পরীক্ষামূলক শুরু হবে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর এখান থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে আরও ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। প্রায় ৮০০ কোটি টাকার বৃহৎ এ প্রকল্পটি দেশের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা যায়, সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ময়মনসিংহ জেলার সুতিয়াখালীর চরাঞ্চলে ‘সুতিয়াখালী ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প’ হাতে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের যৌথ উদ্যোগে এইচডিএফসি সিনপাওয়ার লিমিটেড এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

বেসরকারি বিনিয়োগ ও সরকারি তদারকিতে পিডিবির একজন নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে ১৭৪ একর জমির ওপর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পরিবেশ বান্ধব এ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। ২০১৪ সালে কাগজে-কলমে প্রকল্পের যাত্রা শুরু হলেও অনেক চড়াই-উৎরাই শেষে ২০১৬ সালের শেষ দিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাস্তবায়নচুক্তি এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরের পর ২০১৭ সালে ‘সুতিয়াখালী ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প’ নামে বাস্তবায়ন কাজ শুরু করা হয়। এ কাজে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।

আরও জানা যায়, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পর গত ৩০ জুনের মধ্যেই উৎপাদন শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু নববর্ষের ছুটিতে চীনা প্রকৌশলীরা তাদের দেশে ফিরে করোনাপরিস্থিতিতে আটকে পড়েন। ফলে সোলার প্লেট বসানো ও সংযোগ প্রদানের কাজ বিলম্ব হয়। অন্যদিকে এক অভিযোগে জানা যায়, গুটিকয়েক স্থানীয় রাজনীতিক নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যও বিঘিœত হয় প্রকল্পের কাজ।

প্রকল্প পরিচালক ও পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ জানান, ইকুইপমেন্ট টেস্টিং ও কমিশনিংয়ের পর পরীক্ষামূলক সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলে জাতীয় গ্রিডে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে।

তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে প্রকল্পের অধীনে অফিস ভবন, ব্রহ্মপুত্র নদীশাসন বাঁধ, কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ, এক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সোলার প্লেট বসানো, ১০টি বক্স ট্রান্সমিশনে সংযোগ প্রদান, সাব-স্টেশনসহ ১৩২ কেভিএ ট্রান্সমিশন টাওয়ার নির্মাণ, কেওয়াটখালীস্থ জাতীয় গ্রিড লাইন পর্যন্ত চার কিলোমিটার আন্ডার গ্রাউন্ড ক্যাবল স্থাপন এবং এক কিলোমিটার ওভারহেড ট্রান্সমিশন সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

এইচডিএফসি সিনপাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) শেখ মো. শফিকুল ইসলাম পিএসসি জানান, করোনা মহামারী না থাকলে আরও ৬ মাস আগেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হতো। সরকারের সব নিয়মনীতি অনুসরণ করে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং দেশে চলমান সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় ও মেগা প্রকল্প উল্লেখ করে তিনি জানান, আশা করছি শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।

 
Electronic Paper