ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মাধবদীতে রেলের জমি দখলের হিড়িক

মনগড়া চুক্তিতে বদলাচ্ছে বায়বীয় মালিকানা

খন্দকার শাহিন, নরসিংদী
🕐 ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০

একদিকে চলছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, অন্যদিকে চলছে রেলের পরিত্যক্ত জমি দখলের মহোৎসব। রেলের এসব জমি দখল করেই ক্ষান্ত নন প্রভাবশালীরা। মনগড়া চুক্তিতে বদলে নিচ্ছেন মালিকানা। সেই জমিতে তৈরি করছেন মার্কেট, স্থায়ী দোকানপাটসহ অন্যান্য স্থাপনা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই নাকি চলছে এসব। এমন কা-ে হতভম্ব নরসিংদী সদর, পলাশ ও রায়পুরা উপজেলার মানুষ। রেলের পরিত্যক্ত জমি দখলের হালচাল নিয়ে সরেজমিন প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।

নরসিংদী সদর থেকে নারায়ণগঞ্জ বন্দরে চলাচলের সাবেক রেলসড়কের মাধবদীর অংশে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, স্থাপনা নির্মাণের জন্য জমি নিয়ে চলছে অপতৎপরতা। বেশ আগে জনসাধারণের সুবিধার্থে সড়ক ও জনপদ (সওজ) অধিদফতর এখানে রাস্তা নির্মাণ করে। রাস্তা নির্মাণের পর থেকে এলাকায় লোক সমাগম বেড়ে যায়। সড়কে যান চলাচল শুরু করে।

পরে ধীরে ধীরে এই এলাকা নজরে পড়ে দখলদারদের। রাস্তার দুই পাশের জমি দখল করে নির্মাণ শুরু করেন দোকানপাট ও নানা স্থাপনা। এদিকে মাধবদীর আবদুল্লাহ বাজার, খরমর্দী, শান্তির বাজার, খড়িয়া বাজারে রেলওয়ের পরিত্যক্ত জমিগুলো মনগড়া চুক্তি করে তোলা হচ্ছে মালিকানার দাবি। আর ‘এসব জমির দখল রেলকর্তৃপক্ষকে অবগত করে নেওয়া হচ্ছে’ বলে জানান দখলদাররা।

সরেজমিন মাধবদীর চৌদ্দপাইকা এলাকায় ঘুরে দেখা যায় সওজের সড়কের পাশে রেলের জমিতে আধাপাকা ঘর নির্মাণের নামে সুকৌশল স্থায়ী মার্কেট নির্মাণ করছেন মানিক চন্দ্র কর্মকার। এ সরকারি জমির মালিকানা দাবি করে গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মাধবদীতে সংবাদ সম্মেলনও করেন তিনি ও তার বড় ছেলে অর্জুন চন্দ্র কর্মকার।

সংবাদ সম্মেলনের পর মানিক চন্দ্র কর্মকারের সঙ্গে কথা হলে তিনি দৈনিক খোলা কাগজকে বলেছেন, সম্প্রতি রেলের জমি ভোগদখলে থাকা চৌদ্দপাইকা গ্রামের এম.এ হান্নানের ছেলে এম.এ শাহীন মাহমুদ বাবুল, শাহেদ আলীর ছেলে মোতালিব মিয়া ও ছোট মাধবদী এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে মামুন মিয়াগংদের কাছ থেকে মোট ১১.৮০ (এগার দশমিক আশি) শতাংশ জমি কিনে নিয়েছেন। এর আগে ক্রয়সূত্রে ভোগদখলে থাকা অবস্থায় এ জমিতে ঘর নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় লোকদের বাধার সম্মুখীন হলে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেন।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মানিক চন্দ্র কর্মকার দখলকৃত জমির দক্ষিণে একটি ডোবায় ফাউন্ডেশন দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকাপোক্ত আরেকটি মার্কেট। জনসম্মুখে অবৈধভাবে এই স্থাপনা তৈরি হলেও প্রাণভয়ে মুখ খুলতে নাজার স্থানীয়রা। অথচ ‘সবারই পরিচিত ওই দখলদার’ বলেই জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি। তবে ‘দফায় দফায় রেলওয়ের জমি দখলমুক্ত ও স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের পরও কেন বন্ধ হচ্ছে না স্থাপনা তৈরি’ এমন প্রশ্ন ঘুরে ফিরছে এলাকাবাসীর মনে।

 
Electronic Paper