ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফুলপুরে সাড়া ফেলেছেন চীনের তিন যুবক

চায়নিজ তরমুজ চাষ

এম ইদ্রিছ আলী, ময়মনসিংহ
🕐 ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০

ময়মনসিংহের জমিতে চাষ হচ্ছে চায়নিজ তরমুজ। জেলার ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়নের মধ্য সিংহেশ্বর গ্রামে এ বছর চাষ করা হচ্ছে এ তরমুজ। স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জমি ভাড়া নিয়ে এ তরমুজ চাষ করে সাড়া জাগিয়েছেন সুদূর চীন দেশের তিন যুবক। চাষে সব ধরনের সহযোগিতা করছে স্থানীয় কৃষি অফিস।

ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ বলেন, মধ্য সিংহেশ্বর গ্রামে প্রায় ৪ মাস আগে চীনের তিন সদস্যের একটি দল এসে ১২ একর জমি ২ বছর মেয়াদে লিজ নিয়ে উন্নতমানের তরমুজ চাষ শুরু করেন। পলিথিন দিয়ে ১৬৮টি শেড তৈরি করা হয়। গত ২০ ডিসেম্বর থেকে প্রায় ৫০ হাজার তরমুজের চারা রোপণ করে পরিচর্যা করছেন তারা। চার জাতের চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রতিটি তরমুজ ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রির আশা করছেন। এই তরমুজের উপরিভাগ হবে অনেক পাতলা। ভেতরের অংশ হবে রেড কুইন পেঁপের মতো। রসালো এই তরমুজ স্বাদে ভরপুর হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ, অতিরিক্ত পরিচালক মো. আসাদুল্লাহ ও উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ প্রকল্পটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

আব্দুল মাজেদ বলেন, গাছে গাছে ফল ধরা শুরু হয়েছে। তাদের এই চাষে ইতিমধ্যে প্রায় ৭২ লাখ টাকার ওপর খরচ হয়েছে। চীনা যুবকরা আশাবাদী যদি মোটামুটি ফলন হয়, খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা লাভ হবে। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সবসময় তাদের যে কোনো পরামর্শ দেওয়ার জন্য পাশে আছি। চায়নিজরা যদি সফল হন তাহলে বাংলাদেশে ভবিষ্যতে এই চাষের জনপ্রিয়তা বাড়বে এবং বিভিন্ন এলাকায় এই চাষ শুরু হতে পারে।

তরমুজ চাষ প্রকল্পের পরিচালকদের একজন চিনা নাগরিক মি. ডিং জাং বলেন, গতবছর বোরো ধানের দাম কম পেয়ে কৃষকদের হতাশা ও ধান পুড়িয়ে দেওয়ার খবর জানতে পারি। সেজন্য স্থানীয় কৃষক রমজান আলীর কাছ থেকে প্রায় ৩০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ধানের বিকল্প হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে আমাদের দেশের উন্নত জাতের তরমুজ আবাদের এ প্রকল্প শুরু করেছি। আমরা আশা করছি এতে বছরে কমপক্ষে ১ কোটি টাকা লাভ হবে।

পরিচর্যাকারী স্থানীয় শ্রমিক আব্দুল আলিম বলেন, এই প্রকল্প করেছেন চীন দেশের মি. ডিং জাং, লেহে কিং ও মি. সান জং। আমরা মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনে স্থানীয় ১২ জন এখানে কাজ করছি। অপর শ্রমিক মহর আলী বলেন, আমরা চীনা যুবকদের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি উন্নতমানের তরমুজ চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছি।

স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, চীনা উদ্যোক্তারা প্রতি গাছে মাত্র দুটি করে তরমুজের কড়া রেখে বাকি কড়া কেটে ফেলে দিচ্ছেন। যাতে তরমুজগুলো অনেক বড় হয় এবং বেশি দামে বিক্রি করা যায়। বিষয়টি আমাদের জন্য শিক্ষনীয়।

ফুলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এটা একটা ভালো উদ্যোগ। তারা পলিথিন শিট দিয়ে গ্রিন হাউস সিস্টেম করে চাষ করছে। চায়নিজ জাতের তরমুজ চাষ বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে হচ্ছে। যেটার বাজার মূল্য চায়নাতেও বেশি এবং বাংলাদেশে বাজারজাত করে উচ্চমূল্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। যদি এখানে সফল হয় এবং আবহাওয়া উপযোগী হয় তাহলে তরমুজ উৎপাদনে এটা একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে।

 

 
Electronic Paper