ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাষ্ট্রের অর্থ অপচয়

শাকিল মুরাদ, শেরপুর
🕐 ১০:০০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯

জনগণের দেওয়া ট্যাক্সের টাকা ব্যয় করা হয় রাষ্ট্রের বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে। কিন্তু অরিকল্পিতভাবে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে অপচয় হতে পারে রাষ্ট্রের টাকা। এমনিভাবে জনগণের অর্থের অপচয় করা হয়েছে শেরপুরের নকলা উপজেলার চরমধূয়া নামাপাড়া এলাকায় দুইশ গজের মধ্যে তিনটি সেতু নির্মাণের মাধ্যমে। যদিও এবারের বন্যায় তিনটি সেতুর মধ্যে একটি ভেঙে গেছে।

বাকি দুটির সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে রাষ্ট্রের প্রায় ৯৩ লাখ টাকা অপচয় হয়েছে বলে মনে করেন এলাকাবাসী। কারণ এতো টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা সেতু তাদের কোনো কাজে আসছে না। অনেকেই বলছে, এটা কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ।

স্থানীয়রা জানান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতরের সেতু-কালভার্ট নির্মাণ কর্মসূচির আওতায় ২০১১-১২ অর্থ বছরে নকলা উপজেলার চরমধূয়া নামাপাড়া আলমাছের বাড়ির পেছনে অপরিকল্পিতভাবে ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদের বিধ্বস্ত তীর ও রাস্তায় ২২ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৭ টাকা ব্যয়ে ৩৩ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হয়। এর কিছুদিন পর একই স্থানে অর্থাৎ আগের সেতুর একটু দূরে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় দ্বিতীয় সেতুটি।

এরপর দ্বিতীয় সেতুর আরেকটু দূরে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ৩০ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫৭ টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট দীর্ঘ তৃতীয় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তবে কোনোটাই মজবুত না করায় টেকসই হয়নি বেশি দিন। নির্মাণের কয়েক মাস না যেতেই বন্যায় একটি সেতু ভেঙে যায়। ফাটল ধরে আরেকটিতে। আর সেই সঙ্গে ধসে যায় তিনটি সেতুর সংযোগ সড়কের মাটিও। এতে সরকারের প্রায় ৯৩ লাখ টাকা অপচয় হয়েছে। সেতু ও রাস্তা ধসে যাওয়ার ফলে দুধে রামচর, চরমধূয়া নামাপাড়া, কাজিয়ারচর, জামালপুরসহ ৭-৮টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

ওই এলাকার বাসিন্দা কৃষক আজগর আলী, মোখলেছ মিয়া ও কলেজ শিক্ষার্থী রবিন মিয়া বলেন, অযথা তিনটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে এখানে। যা আমাদের কোনো কাজেই আসছে না। সেতু যখন করতে আসে, তখন আমরা বাধা দিলেও আমাদের কথা শোনেননি কর্মকর্তারা। আমরা চাই এখানে তিন সেতু না দিয়ে একটু উঁচু করে একটা সেতু দিয়ে সরাসরি রাস্তা নির্মাণ করা হোক। তাতে করে এ এলাকার মানুষ খুব সহজে এটার সুফল পাবে।

স্কুলছাত্র অনিক ও জোবায়ের হোসেন বলে, বর্ষাকালে পানি থাকায় ভিজে ভিজে স্কুলে যায়। এজন্য আমাদের জ্বর, ঠাণ্ডা লেগেই থাকে। এখানে সেতুগুলো ঠিক করা খুবই জরুরি। যাতে আমরা সহজেই স্কুলে যেতে পারি।

এ ব্যাপারে নকলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতির চৌধুরীর সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন রাস্তাসহ আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হবে। এতে সুফল পাবে এ এলাকার মানুষ।

নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, শিগরিই ওই এলাকার জনগণের যাতায়াতের জন্য রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।

 
Electronic Paper