ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চার বছর পর গ্রাহকের ঘুষের টাকা ফেরত

ময়মনসিংহ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি

এম. ইদ্রিছ আলী, ময়মনসিংহ
🕐 ৫:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৫, ২০১৯

বিদ্যুতের নতুন সংযোগ পেতে, লোড বৃদ্ধি করতে, ভৌতিক বিলের চক্কর থেকে রক্ষা পেতে কিংবা যেকোন ধরণের সেবা পেতে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকদের অফিসে গিয়ে ঘুষ দুর্নীতিসহ নানা হয়রানির অভিযোগ অহরহই পাওয়া যায়।

অভিযোগ রয়েছে, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দালালদের দ্বারা গ্রাহক হয়রানী যেন গা সয়ে যাওয়া ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপে দেশের হাওয়া এখন হয়তো খানিকটা উল্টা বইছে। তাই বিরল ঘটনার সূত্রপাত ঘটিয়ে ময়মনসিংহ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. মকবুল হোসেনের হস্তক্ষেপে গ্রামের ৮৭ জন গ্রাহক ৪ বছর আগে নতুন সংযোগ লাভের আশায় এক কর্মচারীকে দেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত পেয়েছেন।

সেই সঙ্গে ঘুষ নিয়ে চাপে পড়ে ফেরত দিতে বাধ্য হওয়া ময়মনসিংহ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ফুলবাড়িয়া জোনাল অফিসের চতুর্থ শ্রেণির সেই কর্মচারী আবুল বাশার মোল্লাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

গত বুধবার ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গ্রাহক সেবায় পল্লীবিদ্যুতের উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ৮৭ জন গ্রাহককে ডেকে তাদের প্রদেয় ঘুষের দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

জানা যায়, গত চার বছর আগে রঘুনাথপুর গ্রামের চারটি পাড়া থেকে পল্লীবিদ্যুৎ ফুলবাড়ীয়া জোনাল অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবুল বাশার মোল্লা ৮৭ জন গ্রাহককে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে ঘুষ হিসেবে ১২শ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেন।

বিদ্যুৎতের খুঁটি স্থাপনে অনিয়মের ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ময়মনসিংহ-১ এর ডিজিএম (কারিগরি) মোস্তাফিজুর রহমান সম্প্রতি এলাকায় তদন্তে আসলে এলাকাবাসী তার কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে প্রমাণিত হয় অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবুল বাশার মোল্লার ঘুষ বাণিজ্যের ঘটনাটি। পরে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে আবুল বাশারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

অভিযুক্ত আবুল বাশার কোন উপায়ন্ত না দেখে ঘুষ হিসাবে নেওয়া টাকা ময়মনসিংহ পল্লীবিদ্যুৎ সিমিতি-১ এর জিএম মকবুল হোসেনের কাছে হস্তান্তর করেন। গত বুধবার গ্রাহক সেবায় পল্লী বিদ্যুতের উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ঘুষের টাকা গ্রাহকদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছেন জিএম মকবুল হোসেন।

রঘুনাথপুর পশ্চিম পাড়া মোস্তফা বলেন, বিদ্যুতের জন্য ঘুষ দেওয়ার ৪ বছর পর পাঁচ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছি। কল্পনাও করতে পারিনি গ্রামের মানুষ ঘুষের টাকা ফেরৎ পাবেন।

ময়মনসিংহ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির-১ জেনারেল ম্যানেজার মকবুল হোসেন বলেন, পল্লীবিদ্যুতের সেবার ক্ষেত্রে কোন ধরণের দুর্নীতি অনিয়ম বরখাস্ত করা হবে না। ইতোমধ্যেই সমিতিকে দালাল মুক্ত করা হয়েছে। গ্রাহকদের মাঝে নানা ধরণের সচেতনতা তৈরী করা হচ্ছে। অভিযুক্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 
Electronic Paper