ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বঙ্গবন্ধুকে মোশতাকের রাজনৈতিক প্রতিযোগী বললেন আ.লীগ নেতা

জামালপুর প্রতিনিধি
🕐 ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০২৩

বঙ্গবন্ধুকে মোশতাকের রাজনৈতিক প্রতিযোগী বললেন আ.লীগ নেতা

‘খন্দকার মোশতাক আহমেদ’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রতিযোগী ছিলো বলে মন্তব্য করেছেন জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ হাফিজুর রহমান স্বপন।

 


গত ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সদর উপজেলার নরুন্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও কেক কাটা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত খন্দকার মোশতাককে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রতিযোগী উল্লেখ করে তাঁর দেওয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হবার পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ২৪ মিনিট ৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হাফিজুর রহমান স্বপনকে বলতে শুনা যায়, খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতি প্রতিযোগী ছিলো, ছিলো কি না? বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা মোশতাক সরকারে যোগ দিয়েছিল বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি।

নরুন্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডাঃ এম এ মান্নান খান, বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত নরুন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানসহ বেশ কয়েকজন নেতা। উপস্থিত কোন নেতাই তাঁর এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ কিংবা শুধরে দেয়নি বলেও জানা গেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে খন্দকার মোশতাকের কাতারে টেনে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হাফিজুর রহমান স্বপন বলেন, রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ছিলো, ইতিহাস তাই বলে।

এ ব্যাপারে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ সুরুজ্জামান বলেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কি জানেন না যে, বেইমান মীরজাফর খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারী ছিলো? হত্যাকারীদের দালাল ছিলো? বেইমান মোশতাক কখনই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রতিযোগী ছিলো না। অথচ সেই খুনি মোশতাককে তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রতিযোগী বলে বক্তব্য দিয়ে ইতিহাস বিকৃতি ও জাতির পিতাকে হেয় করার অপচেষ্টা করেছেন। ওই সভায় উপস্থিত কোন নেতা তার বক্তব্যের প্রতিবাদ না করার বিষয়টি আশ্চার্য বলেও মনে করেন অধ্যাপক মোঃ সুরুজ্জামান। তিনি এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আছাদুজ্জামান আকন্দ বাবু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এতবড় ধৃষ্টতাপূর্ন বক্তব্য রাখার ধৃষ্টতা তাকে কে দিছে? এতে করে স্পষ্টত প্রমাণ হয় সে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করেনা। তিনি এধরনের বক্তব্য দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

এঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের সাবেক ভিপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লানজু।

এব্যাপারে কথা বলতে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডাঃ এম. এ. মান্নান খানের মোবাইল ফোনে চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।

 
Electronic Paper