বেতন চাওয়ায় শিক্ষককে মারধর, বাড়িতে হামলা-ভাংচুর
ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৫:১১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০২২
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার কাকনহাটি দারুল কোরআন হামিদিয়া হাফিজিয়া-মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছে পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন চাওয়ায় মাদ্রাসার শিক্ষকের দাঁড়ি ছিড়ার পর বেধড়ক মারধর ও তার বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠেছে।
হামলায় শিকার মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও শিক্ষক কাকনহাটি গ্রামের মৃত আঃ হামিদের ছেলে মোঃ ফজলুল হক। এ ঘটনায় আহত মাদ্রাসার পরিচালক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ফজলুল হকের স্ত্রী আয়েশা খাতুন বাদী হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় অভিযুক্ত এনামুল হকসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লিখিত অপর ব্যক্তিরা হলেন- একই গ্রামের আঃ সালাম (৪৫), মঞ্জরুল হক (৩০), আঞ্জু মিয়া (৪২), শামছুল হক (৬০), রাকিবুল ইসলাম (২৫)।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কাকনহাটি গ্রামের এনামুল হকের ছেলে আরাফাত (৭) কাকনহাটি দারুল কোরআন হামিদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। বিগত পাঁচ মাস ধরে এনামুল তার ছেলের বেতন পরিশোধ না করায় মাদ্রাসার পরিচালক বেতন দেওয়ার কথা জানান। আজ না কাল দিবে বলে নানা অজুহাত দেখিয়ে বেতন দেয়নি এনামুল। ঘটনার কিছুদিন আগে এনামুল দাবি তোলেন তিনি মাদ্রাসার পরিচালকের বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মাদ্রাসার পরিচালক জানান তার নাম্বারে কোন টাকা আসেনি। তিনি এনামুলকে বিকাশে টাকা পাঠানোর মেসেজ দেখাতে বলেন। ঢাকা থাকায় তখন এনামুল বলেন, আমি বাড়িতে এসে মেসেজ দেখাবো।
পরে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এনামুল মাদ্রাসায় আসেন। তখন মাদ্রাসার পরিচালক বেতন চাইলে এনামুল অকথ্য ভাষায় গালগালাজ শুরু করেন।এসময় আরও বলতে থাকেন- কিসের টাকা দিব,তোর টাকা আমি দিবো না। এতে শিক্ষক ফজলুল হক প্রতিবাদ জানালে এনামুল তার মুখের দাঁড়ি ও মাথার চুলে ধরে টেনেহিঁচড়ে মেঝেতে ফেলে দেন। বেধড়ক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে ফেলেন। পরে তারা আরো ৬ থেকে ৭ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ ডেকে আনে বাড়িতে হামলা ভাঙচুর- লুটপাট করে নগদসহ ৭০ হাজার ক্ষতি সাধন করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও নানা রকমের হুমকি প্রদান করে।
এবিষয়ে মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক মোঃ ফজলুল হক জানান, আমি বেতন চাওয়ায় মাদ্রাসায় এসে এনামুল হক ছাত্র ও অভিভাকদের সামনে গালিগালাজের এক পর্যায়ে আমার মুখে থাকা এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি ছিড়ে ফেলে। আমাকে লাথি ও ঘুষি মারতে থাকে। পরে একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে আমার মাথায় স্ব জোরে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এখানেই থেমে যায়নি ওরা, আমাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসা নিতে বাঁধা প্রদান করে। আমার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করে। আমি প্রশানের কাছে এর সঠিক বিচার চাই । তিনি আরও জানান, আমার উপর আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান জানান, এ ঘটনায় দুই পক্ষের কাছ থেকেই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টির তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।