ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হাওরাঞ্চল খাদ্যের ভাণ্ডার ধানে-মাছে অন্যন্য

সালাহ উদ্দীন খান রুবেল
🕐 ২:০১ অপরাহ্ণ, জুন ২৭, ২০২১

হাওরাঞ্চল খাদ্যের ভাণ্ডার ধানে-মাছে অন্যন্য

নেত্রকোণার ছয়টি উপজেলা হাওর অঞ্চল। উপজেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী, আঁপাড়া, কেন্দুয়া, কলমাকান্দা। হাওর অঞ্চল মূলত বোরো ধানের আবাদের পরিমাণ বেশি, কারণ- আবাদী ফসলি জমি নিচু এলাকা হওয়ায়। নেত্রকোণা জেলায় হাওর অঞ্চলে শুধুমাত্র বোরো আবাদের পরিমাণ চল্লিশ হাজারের বেশি হেক্টর জমি রয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ছয় টন ধান উৎপাদিত হয়। আমন ধানের পরিমাণ কমই হয়। হাওর অঞ্চলে বোরো-আমন ধানের পাশাপাশি শাকসবজি, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, চিনাবাদাম, গম, ভুট্টা, সূর্যমূখী সহ অন্যান্য মৌসুমি ফসল উৎপাদিত হয়। সেই সঙ্গে রয়েছে মানবদেহের আমিষের ঘাঁতি পূরণে অপরিসীম মাছের ভাণ্ডার।

খালিয়াজুরীতে প্রায় বিশ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়, শুধুমাত্র মেন্দীপুর এলাকাসহ আংশিক আবাদী ফসলি জমিতে আমন ধান উৎপাদিত হয়। যার পরিমাণ আনুমানিক পাঁচশত হেক্টর। মোহনগঞ্জ এলাকায় ছয় হাজার পাঁচশত হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদিত হয়। উঁচু জমিতে অল্প পরিমাণ আমন ধান উৎপাদিত হয়। মদন এলাকায় প্রায় আট হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদিত হয়। আমন ধান মোটামুটি উৎপাদন হয়। আটপাড়া এলাকায় বোরো ধানের পরিমাণ বেশি তবে আমন ধানের উৎপাদন খুবই কম। এ অঞ্চলে প্রায় এক হাজার চারশত হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়। কেন্দুয়া এলাকায় প্রায় বিশ হাজার সাতশত হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়।

এ অঞ্চলে বোরো-আমন ধানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অন্যান্য ফসলও প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হয়। কলমাকান্দা এলাকায় প্রায় চার হাজার পাঁচশত হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদিত হয়। এখানে উঁচু জমিরও রয়েছে। উঁচু আবাদী ফসলি জমিতে আমন ধান এবং অন্যান্য ফসল উৎপাদিত হয়। নেত্রকোণার হাওর অঞ্চলে মরিচ প্রায় তিন শত/চার শত হেক্টর আবাদী জমিতে উৎপাদন, চিনাবাদাম প্রায় দুইশত/দুইশত পঞ্চাশ হেক্টর আবাদী জমিতে উৎপাদন হয়, গম প্রায় দুইশত/দুইশত পঞ্চাশ হেক্টর আবাদী জমিতে উৎপাদন হয়, ভুট্টা প্রায় একশত/একশত পঞ্চাশ হেক্টর আবাদী জমিতে উৎপাদন হয়, মিষ্টি কুমড়া প্রায় তিনশত/চারশত হেক্টর আবাদী জমিতে উৎপাদন হয়, শাকসবজি প্রায় চারশত/পাঁচশত হেক্টর আবাদী জমিতে উৎপাদন হয়। হাওরের উঁচু এলাকায় চোখে পড়ার মতো সূর্যমুখী ও সরিষার আবাদ হয়েছে। নেত্রকোণার হাওর অঞ্চলে প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন কেন্দ্র বললেই চলে।

নেত্রকোণা ছাড়াও হাওরাঞ্চলে আরও ছয়টি জেলা রয়েছে। যেখানে প্রধানত বোরো ধানের চাষ হয়। হাওর অঞ্চলের বাকি জেলাগুলো হলো কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সাত জেলার ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। এ সব জমিতে ৩৭ লাখ থেকে ৩৮ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। যা মোট বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২০ ভাগ। এর ফলে পুরো হাওরের ধান চাষের দিকে নজর রয়েছে।

হাওর উন্নয়ন পরিষদ, নেত্রকোণা জেলা শাখার সভাপতি সাগত সরকার শুভ জানান- হাওর অঞ্চল ধান-মাছের ভাণ্ডার। কিন্তু হাওরবাসীর দুর্ভোগও রয়েছে, এই জন্য চাই হাওরের হালটগুলো উদ্ধার করে যাতায়াতের সুব্যবস্থা করা, ডুবন্ত স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা, যাতে করে কৃষক তার ধান আগাম বন্যার আগেই ঘরে তুলতে পারে এবং ন্যায্য মূল্য পায়। মাছ হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদ নীতিমালায় আছে “জাল যার জলাশয় তার” এই নীতিমালা কাগজপত্রে থাকলেই চলবে না বাস্তবায়ন থাকতে হবে। হাওর অঞ্চলের প্রতিটি জলাশয়ের সঠিক সীমানা নির্ধারণ করা এবং জলাশয়ের ইজারাদারগণ চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করেন জলাশয়ে গাছপালা রোপণসহ অভয়াশ্রম তৈরির কিন্তুু তা বাস্তবায়ন হয় না।

নেত্রকোণা কৃষি সম্প্রসারণ ও খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এফ.এম মোবারক আলী বলেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী গণমানুষকে উৎসাহ-উদ্দীপনা দিচ্ছি যেন এক ইঞ্চি জমিও পতিত না রাখে। যেমন- হাওর অঞ্চলে ভূমির উপযোগী হিসেবে ধান, সরিষা, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, গম, ভুট্টা, চিনাবাদাম, সূর্যমূখী, শাকসবজি সহ অন্যান্য ফসলাদি চাষাবাদ করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মতে কৃষি অধিদফতর যেমনি কাজ করে যাচ্ছে মাঠে-ঘাটে দেশের চাহিদা মেটানোর জন্য ধান উৎপাদনের জন্য ঠিক তেমনি মৎস্য অধিদফতরও ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন খাল-বিল, নদী-নালা ও হাওর জলাশয়ে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উৎপাদনের জন্য, যার ফল পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশে, বর্তমান সময়ে ধান, মাছ উৎপাদন অপরিসীম বৃদ্ধি পাওয়ায়। এ ছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার কৃষি, মৎস্যসহ রবিশস্যের জন্য কৃষকগণকে বিভিন্ন ধরণের প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। হ

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper