ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জেলায় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় কর অবকাশ

স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারিত হবে

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান
🕐 ৩:০১ অপরাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২১

স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারিত হবে

২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম যেদিন করোনা রোগী শনাক্ত হলো সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন প্রতিটি উপজেলায় করোনা টেস্ট হবে। টেস্ট হলো কত, এক হাজার করে। এখন যেটা হচ্ছে পনরো-বিশ হাজার। এই বৃদ্ধি প্রমাণ করে সক্ষমতা বেড়েছে, বাড়ানো হয়েছে।
তারপর তিনি বললেন, প্রতিটি জেলায় করোনার চিকিৎসা তথা অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হবে। অক্সিজেন দেওয়ার সক্ষমতা সেটাও সৃষ্টি করা হয়েছে। এটার উদ্দেশ্য কী, বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা যে সক্ষমতা তা পৃথিবীর কোনো দেশে এমন সক্ষমতা কিন্তু নেই। প্রতিটি উপজেলা পর্যন্ত কিন্তু চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। সেখানে জাস্ট সক্ষমতা বাড়ানো। সেখানে শুধু অক্সিজেন দেওয়ার সক্ষমতা তৈরি করা।

যারা ব্যবসায়ী তারা কিন্তু প্রাইভেট স্কুল, কলেজ, হাসপাতালে বিনিয়োগ করছে। সবক্ষেত্রেই ব্যবসা করতে পারে। ২০০ বেড পর্যন্ত হাসপাতাল খোলার ক্ষেত্রে কর অবকাশ প্রস্তাব করা হয়েছে। যারা এ ধরণের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা কর সুবিধা পেলো, এর মধ্য দিয়ে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হলো। যেখান থেকে মানুষ চিকিৎসা সুবিধা পেল। এর মাধ্যমে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা শহর থেকে গ্রাম পৌঁছে গেল। আমাদের সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা কিন্তু সারা দেশে মডেল; উপজেলা থেকে একেবারে কমিউনিটি পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসা কার্যক্রম আছে। কিন্তু বেসরকারি সেবা ইউনিয়ন পর্যন্ত সেভাবে পৌঁছেনি। বেসরকারি উদ্যোক্তা কর অবকাশ পায়, এই সুবিধা যদি তারা গ্রহণ করে জেলা পর্যায়ে দুইশ বেড়ের হাসপাতাল খুলে তাহলে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। এতে ব্যবসায়ীরা সুযোগটা নিলো আবার জনগণও সুবিধাটা নিলো। সরকারি-বেসরকারি সবাই মিলে চিকিৎসা সেবাতে অংশগ্রহণ করলে মানুষে তার সুফল পাবে।

বেসরকারিভাবে দুই শ বেড়ের এর হাসপাতাল খুললে সেখানে কনসালটেন্স বসার সুযোগ থাকবে। ঢাকা থেকে সেখানে কনসালটেন্সরা যাবে। এখন যেমন বিভিন্ন উপজেলায় প্রতি শুক্রবার ঢাকা থেকে ডাক্তাররা যান। এর মাধ্যমে মানুষ চিকিৎসা সেবা পান। বেসরকারি পর্যায়ে মানুষ যখন হাসপাতাল খুলবে তখন সেখানে বিশেষজ্ঞরা ডাক্তাররা থাকবেন। সে সময় জটিল যে সব রোগের চিকিৎসা নেওয়ার জন্য এখন যেমন বিভাগীয় শহর বা ঢাকাতে আসে তখন কিন্তু একই চিকিৎসা জেলা পর্যায়েই পাবে।

সরকারি পর্যায়ে গ্রাম পর্যন্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। আপনি বলতে পারেন আইসিইউ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই কেন! সেটাও কিন্তু সরকার করে দিচ্ছে। বেসরকারি পর্যায়ে যদি কর অবাকাশ সুবিধা নিয়ে চিকিৎসা সুবিধা ব্যবস্থা সম্প্রসারিত হয় সেটা আরও ভালো হবে। শহরের চিকিৎসা গ্রাম তথা জেলা পর্যায়ে পৌঁছে যায় সরকারি সে জন্য এই কর অবকাশ ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে।

সব মানুষই যদি চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে যায় তাহলে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এ জন্যই ইউনিয়ন পর্যায় থেকে বিভিন্ন স্তরে চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায় থেকে চিকিৎসা নেবে। উপজেলা পর্যায়ে না পেলে জেলা পর্যায়ে যেতে হবে।

তারপরও যদি উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় এবং জেলাতে সে চিকিৎসার না করা যায় তাহলে সে বিভাগীয় শহর বা ঢাকাতে যাবে। এজন্য জেলা পর্যায়ে এ ধরনের কর অবকাশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সে সুবিধা সরকার চিকিৎসার সেবার উন্নতি করতে চায়। সব খানে চিকিৎসা ব্যবস্থা ছড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে না। শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থা এ পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে, এটা কিন্তু করোনা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে। করোনা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা শুধু ঢাকাতে না রেখে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিলে দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব। যদি কোন করোনা রোগীকে ঢাকাতে আসতে হয় তাহলে করোনা ছড়াতে ছড়াতে ঢাকায় আসবে। যদি উপজেলা বা জেলাতে হয় তাহলে সে উপজেলাতে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাবে। এর মাধ্যমে তার খরচও বেঁচে গেল, আবার করোনা ছড়ানোর থেকে রক্ষা পেল।

আমি মনে করি সরকার যে উদ্দেশ্য নিয়ে কর অবকাশ প্রস্তাব করা হয়েছে তা কার্যকর হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীয়করণ হলো, মানুষের সেবা নিশ্চিত হলো, ঢাকার ওপর চাপ কমল। আবার যে মানুষটি জেলা বা উপজেলা পর্যায় থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হলো তার খরচও কমল। এর মধ্য দিয়ে সরকারের যে ভিশন গ্রামে শহরের সেবা পৌঁছে দেওয়া সরকারের সে ভিশন তা বাস্তবায়ন হলো।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper