ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

করোনা যুবকদের হতাশা বাড়িয়েছে

এম এ মাসুম
🕐 ৩:১৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৭, ২০২০

করোনা যুবকদের হতাশা বাড়িয়েছে

করোনার আতঙ্ক প্রতিটি মুহূর্ত যেন তাড়া করছে। একেকটি দিন পার করা করোনামুক্ত সময়ে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোটা বিশ্বে শুধু আক্রান্ত আর মৃত্যু হারই বাড়ছে না, মানুষের স্বাভাবিক জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে। স্থবির হয়ে পড়েছে কর্মসংস্থানের পথ। বাড়ছে অর্থসংকট। ইতিমধ্যে ভাটা পড়েছে বিশ^ অর্থনীতিতে। এ মন্দা স্বাভাবিক হতে কত দিন লাগবে, তাও বলতে পারছেন না অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশের অন্তত ৬০ শতাংশ জনগোষ্ঠী তরুণ কর্মক্ষম। যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছর। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে হিমশিম খেতে হয়। কর্মে সক্ষম নতুন যোগ হওয়াদের মধ্যে অর্ধেক থেকে যায় বেকার। আবার অদক্ষ, অল্প দক্ষদের বড় অংশ কাজ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। এমন বাস্তবতায় করোনার হানা অনেকটা মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।

এলোমেলো অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গেল কয়েক মাসে কর্মহীন, চাকরি হারানো বা বিদেশফেরত লোকের সংখ্যা আরও বেড়েছে। নতুন নিয়োগ বা কাজের জোগান বর্তমান অবস্থায় খুবই সীমিত। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্যেও এমন চিত্র উঠে এসেছে। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে চাকরির বাজার পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে পালটে গেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা না হওয়ার কারণে কর্মী ছাঁটাই করছে আবার অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই না করলেও নতুন নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সংকটের কারণে বাংলাদেশে প্রতি চার জন যুবকের মধ্যে একজন কর্মহীন বা বেকার রয়েছে (২৭.৩৯%)। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই বেকারত্ব বাড়ছে। বেকারত্বের হারের বিচারে দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয়। সরকারি চাকরিতে শূন্য পদের সংখ্যা ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮। করোনার কারণে গত ৬ মাস ধরে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত থাকায় এ সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়েছে।

এসব পদে নিয়োগ পেতে অপেক্ষায় আছেন ২০ লাখের বেশি শিক্ষিত বেকার। পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ডিগ্রি আছে এমন বেকারের সংখ্যা ৪ লাখ। করোনার প্রভাবে অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ার কারণে বেসরকারি পর্যায়ে চাকরি হারিয়েছেন অনেকেই। দেশে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি নিয়ে চাকরির জন্য লড়াই করতে হয় লাখ লাখ তরুণকে। অনেক শিক্ষিত গ্র্যাজুয়েটকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়। এর মধ্যে প্রতি বছর বিসিএস পরীক্ষার জন্য অপেক্ষায় থাকেন হাজার হাজার তরুণ। নন-ক্যাডার সরকারি ও বেসরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেন আরও বেশিসংখ্যক পরীক্ষার্থী।

করোনা পরিস্থিতির কারণে সব চাকরির পরীক্ষাই আটকে গেছে। সরকারি ব্যাংকগুলোতে চাকরির পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেও শেষ পর্যায়ে পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। অনেকেই আছেন, যাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স আর বেশিদিন নেই। স্বভাবতই তারাই বেশি উদ্বিগ্ন। বস্তুত করোনা যুব সম্প্রদায়ের হতাশা বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পই দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির চালিকা শক্তি। অল্প বা মোটামুটি বিনিয়োগে অধিক কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে এই খাত।

বাংলাদেশের মতো বিপুল শ্রমশক্তির দেশে বেকারত্ব হ্রাস ও দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশ এবং মোট শ্রমবাজারের ২৫ শতাংশের কর্মসংস্থান হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানাগুলোতে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper