ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কিউআর কোড পেমেন্ট এবং ডিজিটাল অর্থনীতি

শামস আরেফিন
🕐 ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২০

কিউআর কোড পেমেন্ট এবং ডিজিটাল অর্থনীতি

ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যম কিউআর কোডে নগদ টাকার ব্যবহার ছাড়া বা কেনাকাটায় পেমেন্ট প্রদানে ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার দেশে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ১৯৯০ সালের পরে বিশ্বে কিউআর কোডের প্রচলন শুরু হলেও আমাদের দেশে সম্প্রতি এটা চালু হয়েছে। যাতে স্মার্টফোনের বারকোড স্ক্যানারের মাধ্যমে স্ক্যান করে পেমেন্ট করা যায়। চীনে আলী পে, উইচ্যাট পে, ভারতে পেটিএম এবং কিউআর তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ১১ মার্চ বাংলা কিউআর স্ট্যান্ডার্ড ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত বাংলা কিউআর কোড দিয়ে নির্দিষ্ট যেকোনো ব্যাংকের অ্যাপ ব্যবহার করে কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন করা যায়। এতে করে ব্যাংক গ্রাহকদের বিভিন্ন পেমেন্ট নেটওয়ার্কের একাধিক কিউআর কোড ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না। ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় উদ্যোক্তা বা খুচরা বিক্রেতা এ আধুনিক পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে দৈনন্দিন ব্যবসায়িক লেনদেন, আমদানি-রপ্তানি শুল্ক বা ভ্যাট সহজেই প্রদান করতে পারে। বলা হচ্ছে, কিউআর কোডের মাধ্যমে আধুনিক, দ্রুত ও ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। নগদ টাকা ও ব্যাংক কার্ড ব্যবহার ও বহনের পরিবর্তে এটি একটি ঝামেলামুক্ত পেমেন্ট সিস্টেম।

দেশের ১০ কোটির মতো মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে এবং ১৬ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যবহার করছে। যা ডিজিটাল অর্থনীতির সবেচেয়ে সম্ভাবনাময় দিক। নগদহীন সমাজ গঠনে সরকারের নিরলস প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিটি দেশে ডিজিটাল পেমেন্ট গ্রহণযোগ্যতার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধির সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। মোবাইল ব্যাংকিং থেকে ডিজিটাল ওয়ালেটে রূপান্তরের কাজও বর্তমানে চলছে। এতে করে ঘরে বসেই কেনাকাটা, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, টিকিট কেনা, হোটেল বুকিং ইত্যাদি সব আর্থিক কার্যক্রম সহজে করা যাবে।

ব্যাংকিং খাতে কিউআর কোড ব্যবহারের সুবিধা : কিউআর কোড ভিত্তিক এই পেমেন্ট সমাধান ব্যবহার করতে গ্রাহকরা নির্দিষ্ট ব্যাংকের অ্যাপের মাধ্যমে কিউআর কোডটি স্ক্যান করে অর্থ প্রদান করার জন্য তাদের মাস্টার কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট বা প্রিপেইড কার্ড থেকে সব ধরনের আর্থিক লেনদেন করতে পারবে। এতে করে প্রথমত গ্রাহকদের বিভিন্ন পেমেন্ট নেটওয়ার্কে আর আলাদা কিউআর কোড স্ক্যান করতে হবে না। দ্বিতীয়ত, ব্যবসায়ীরা দোকানে বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে একটি করে কিউআর কোড প্রদর্শন করে লেনদেন করতে পারবে। তৃতীয়ত, কিউআর কোডটি বৈদেশিক আন্তঃযোগাযোগ সমাধান হিসেবে অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা বিদেশি ব্যবসায়ী, বিদেশি কর্মজীবী ও ভ্রমণকারী গ্রাহকেরা স্ক্যান করে আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন। কিউআর কোড আর্থিক খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং আর্থিক সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিবে।

ইতোমধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া, সিটি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও ইবিএলসহ বিভিন্ন ব্যাংক কিউআর কোডের মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা পদ্ধতি চালু করেছে। এ পদ্ধতিতে সহজেই কিউআর কোড স্ক্যান করে ব্যবহারকারী যেকোনো ধরনের পেমেন্ট করতে পারবেন। দেশে বিকাশ, নেক্সাস পে, ইউপে ইত্যাদি মোবাইল ফিন্যান্সিং সার্ভিস কিউআর কোড সেবা চালু রয়েছে। কিউআর কোড দেশের অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম সহজীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। (সংক্ষেপিত)

লেখক : গবেষণা সহযোগী ও উপসচিব
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper