ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সঞ্চয়ের শিক্ষা স্কুল ব্যাংকিং

মাহবুবা আহসান
🕐 ৬:৫১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৮

ছাত্রজীবন হলো জীবনের সঙ্গে জড়িত নানা অনুষঙ্গের শিক্ষালয়। একজন ছাত্র বিদ্যালয়ে এসে যেমন তার শিক্ষা ও চারিত্রিক গুণাবলী রপ্তের পাশাপাশি জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখে, পাশাপাশি তেমনি সে অর্জন করতে শেখে তার আশপাশের পরিবেশ থেকেও। মনে রাখতে হবে দেশ ও দশের সুন্দর সুস্থ ভবিষ্যৎ নির্ভর করে ছাত্রদের ওপরই। শৈশবে শিশুর হৃদয় কোমল থাকে এবং তারা সাধারণত অনুকরণপ্রিয় হয়। সেই সময় তাদের কোমল হৃদয়ে যে ছাপ পড়ে, তা আজীবন সাথী হয়।

‘ছোট ছোট বালু কণা বিন্দু বিন্দু জল/গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল’/ছোট ছোট বালু কণা দিয়ে যেমন মহাদেশ এবং বিন্দু বিন্দু জল দিয়ে যেমন সাগরের সৃষ্টি হয়, ঠিক তেমনি ‘ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় দিয়েও একটা বড় সঞ্চয়/মূলধন গড়ে তোলা সম্ভব। আর এ মূলধন দিয়েই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পক্ষে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। মানুষ আয় করে ভোগ করার জন্য। ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানে অর্জিত আয়ের পুরোটাই মানুষ ভোগ করে না। আয়ের কিছু অংশ রেখে দেয় কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তথা ব্যাংকে। এ রেখে দেওয়া অংশের নাম সঞ্চয়। ব্যক্তির সঞ্চয় নির্ভর করে দূরদৃষ্টি, পারিবারিক দায়িত্ববোধ, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদির ওপর। স্কুল ছাত্রছাত্রীদের সঞ্চয়ে আগ্রহী করে তোলার মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের তথা পরিবার ও দেশের অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনয়ন করাই স্কুল ব্যাংকিংয়ের মূল লক্ষ্য।
স্কুল ব্যাংকিংয়ে ছাত্রছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তারা যেন অপ্রয়োজনে অর্থাৎ অহেতুক টাকা-পয়সা নষ্ট না করে সঞ্চয়ে অগ্রহী হয়। তাদের গল্পের ছলে, কবিতার ছন্দে বুঝাতে হবে, তাদের ভেতরে চেতনা জাগ্রত করে তুলতে হবে যেমনটি ছোটবেলায় সেই নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য এর লেখা কবিতাটিতে আমরা পড়েছি ছোট মৌমাছি মধু সংগ্রহে, পিপীলিকা ভবিষ্যতের শীতের সঞ্চয়ে ব্যস্ত, ঠিক তেমনিভাবে স্কুল জীবন থেকেই তারাও যেন তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে বড় সঞ্চয় তৈরি করে ভবিষ্যতের নানা দুর্যোগের হাত থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া আরও বুঝাতে হবে, তাদের এ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় ব্যাংকে জমা হলে সেগুলো একত্রে বড় সঞ্চয়/মূলধন সৃষ্টি হবে। সেই মূলধন নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, কল-কারখানাতে বিনিয়োগ করলে তাতে কর্মসংস্থান হবে। বিনিয়োগ মানে সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে। সেখানে বহু লোকের চাকরি হবে। সে ক্ষেত্রে আয় হবে। আবার আয় হতে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ হবে। এভাবে চাকা ঘুরতে থাকবে। একে অর্থনৈতিক চাকা বলে। এ চাকাকে কখনো থামতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ তথা এ জাতিকে শান্তিময় ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে এবং জীবনের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে সম্পদ তথা সঞ্চয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘দারিদ্র্য হলো অপরাধ ও বিপ্লবের জননী’। তাই ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দেওয়া, ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য সঞ্চয় অতি আবশ্যক। অর্থাৎ সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য দরকার সুন্দর ব্যাংকিং সঞ্চয়।
হিসাব খোলার জন্য প্রাথমিক করণীয় : প্রাথমিকভাবে ন্যূনতম ১০০.০০ (একশত) টাকা জমা দিয়ে হিসাব খোলা যাবে। তবে যে কোনো পরিমাণ অর্থ এ হিসাবে জমা দেওয়া যাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ/ব্যাংক অফিসিয়াল/শাখার যে কোনো হিসাবধারী কর্তৃক সত্যায়িত ছবি (কমপক্ষে তিন কপি করে) প্রয়োজন হবে। ছাত্রছাত্রী সম্পর্কে স্কুল কর্তৃপক্ষের সনদ এবং অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা কমিশনার/চেয়ারম্যান কর্তৃক ইস্যুকৃত নাগরিকত্ব সনদ গ্রহণ সাপেক্ষে হিসাব খোলা যাবে। হিসাব খোলার সময় অবশ্যই নমিনী (নমিনীর ছবি হিসাব পরিচালনাকারী কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে এবং নমিনীর মৃত্যু অথবা প্রয়োজন অনুসারে নমিনী পরিবর্তনযোগ্য) নির্বাচন করতে হবে।

মাহবুবা আহসান, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper