রাবার ড্যামে কৃষকের ভাগ্য বদল
ফরিদ আহমেদ, বোচাগঞ্জ (দিনাজপুর)
🕐 ৩:৫২ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২২
বোচাগঞ্জে টাঙ্গন নদীর উপর নির্মিত রানীরঘাটা রাবার ড্যামের কারণে ভাগ্য বদলেছে কয়েক হাজার কৃষকের। রাবার ড্যামের পানির সেচে চলতি মৌসুমে বোরো ধান ও ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকেরা বাজারে ধান ও ভুট্টার দাম বেশি পাওয়ায় কৃষি কাজ করে ভাগ্য বদলেছে তাদের। ছাতইল ইউনিয়নের পরমেশ^রপুর রানীরঘাট সংলগ্ন টাঙ্গন নদীর উপর ২০০৯ সালে রাবার ড্যামের কাজ শুরু হয়।
সংসদ সদস্য বর্তমান নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এ রাবার ড্যামটির ভিত্তি প্রস্তরের উদ্বোধন করেন। এরপর ২০১২ সালে রারার ড্যামটি উদ্বোধন করা হলে বদলে যায় এই এলাকার কৃষকের ভাগ্য। যেখানে খরা মৌসুমে পানির অভাবে কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারতো না সেখানে রাবার ড্যামে আটকানো পানি দিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে উপজেলার ১২ টি মৌজা ও পাশর্^বর্তী ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ্ উপজেলার ১০টি মৌজার কয়েক হাজার কৃষক কৃষিকাজ করে উপকৃত হয়েছেন। বিশেষ করে বোরো ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রবিশস্য আবাদ করতে পারছেন নদী সংলগ্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
রাবার ড্যাম সমবায় সমিতির সভাপতি নুর সুলতান জানান, এক সময় নদীর সংলগ্ন দুই পারের জমিতে পানির অভাবে তেমন কোন আবাদ হত না। কৃষকরা হাড় ভাঙা পরিশ্রম করেও তেমন ফলন পেত না যার ফলে অর্থনৈতিক ভাবে এ এলাকার কৃষকরা পিছিয়ে ছিল। কৃষকের কথা ভেবে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ২০০৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর ২০০৯ সালে তিনি রানীরঘাট এলাকায় টাঙ্গন নদীর উপর রাবার ড্যাম নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ২০১২ সালে রাবার ড্যামটি চালু হওয়ার পর থেকে ভাগ্য বদলাতে শুরু করে এই এলাকার কৃষকের।
সময়মত সেচ ও তদারকির ফলে যে কোন ফসলের ফলন দ্বিগুন হারে বাড়ছে। সমবায় সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত এই রাবার ড্যামটির আওতায় ২ হাজার কৃষক রয়েছেন। বোচাগঞ্জ ও পীরগঞ্জ উপজেলার ২২ টি মৌজায় ৩৮ টি পাম্পের মাধ্যমে নদী থেকে জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয়। এজন্য প্রতিটি কৃষককে সমবায় সমিতিতে নির্দিষ্ট হারে এককালিন নামমাত্র টাকা দিতে হয়। সেই টাকা দিয়ে রাবার ড্যামের রক্ষনাবেক্ষন ও কেয়ার টেকারের বেতন দেওয়া হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা আলাউদ্দীন শেখ জানান, চলতি বোরো ও ভুট্টা মৌসুমে রাবার ড্যামের আওতায় উপজেলার ১২টি মৌজায় ভুট্টা ৮২০ হেক্টর ও বোরো ধান ৩০৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ছাতইল ইউনিয়নের তেতড়া, ওশুরগাঁও, ষাটপুকুর, মাহেরপুর, সুকদেবপুর, নারইল, আনোড়া, কুকুড়াডাঙ্গী, কোদালকাঠি, ৬নং রনগাঁও ইউনিয়নের শ্রিমন্তপুর, সাদামহল, বনগাঁ মৌজার কয়েক হাজার কৃষক রাবার ড্যামের সেচের আওতায় রয়েছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, বেলে মাটির হার বেশি হওয়ায় একসময় তাদের জমিতে সেচের অভাবে ভালো আবাদ করতে পারতো না। কিন্তু রাবার ড্যামের সুবাদে তারা এখন সহজেই সেচের পানি পাওয়ায় ভালো ভাবে আবাদ করতে পারছেন এবং ফলনও পাচ্ছেন দ্বিগুন। বিশেষ করে এবার বোরো ধান ও ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছে অধিকাংশ কৃষক।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228