রোজিনার জামিনে তথ্যমন্ত্রীর সন্তোষ, শিগগিরই চূড়ান্ত হবে গণমাধ্যমকর্মী আইন
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ৯:৪২ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২১
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়ায় আইন মন্ত্রণালয় কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। শিগগিরই সেটা চূড়ান্ত করা হবে। এই আইন পাস হলে সব সাংবাদিক সুরক্ষা পাবেন।’ রোববার দুপুরে রোজিনা ইসলামের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন সাংবাদিক নেতারা। এ সময় তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই আইনের আলোকে সম্প্রচারের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়া যাবে। বিধিমালার মাধ্যমে সম্প্রচারের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের আনা হবে। কাজেই আলাদা করে তখন আর সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের প্রয়োজন হবে না।’
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ), বিএফইউজে, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ডিইউজে, সম্পাদক ফোরাম, ডিআরইউ এবং ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের প্রতিনিধিরা মন্ত্রীর সঙ্গে এই মতবিনিময় করেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাজ করতে হবে, একই সঙ্গে আইনও মানতে হবে। যেসব পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয় না, সে সব পত্রিকায় যেন সরকারি বিজ্ঞাপন না পায়। পত্রিকাগুলোর ভৌতিক প্রচার সংখ্যা ডিএফপিতে আছে, সেটা সংশোধনের কাজ চলছে। আসল প্রচার সংখ্যা কত, সেটা তদন্ত করে বের করেছি। তাদের প্রচার সংখ্যা শুনলে হয়তো অনেকেই লজ্জা পাবেন, তাই আমি সেটা বলতে চাই না। এখানে শৃঙ্খলা আনতে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন হওয়ায় আমিও সন্তোষ প্রকাশ করছি। তার জামিনের কারণ রাষ্ট্রপক্ষ এতে কোনো বিরোধিতা করেনি। অর্থাৎ রাষ্ট্রপক্ষ চেয়েছে তার জামিন হোক। আশা করবো, জামিন হওয়ার পর সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। আপনাদের ক্ষোভ ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছেন। আপনারা আবার আগের মতো কাজে ফেরত যাবেন, কাজকর্ম করবেন সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনের মতো একই আইন ভারত-পাকিস্তানসহ আরও ৪০টি দেশে আছে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং আইন মানতে হবে।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নই, তাই প্রথম থেকেই বিষয়টিকে সেভাবে দেখার জন্য অনুরোধ করেছি। নিরপেক্ষ তদন্ত যেন হয়, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকবো। তার সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ করা হলে সেটাও তদন্তে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের সঠিকভাবে বেতন-ভাতা না দিলে, তারা সরকার থেকে যে সুযোগ-সুবিধা পান, সেটা দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন দিয়ে গঠিত হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আছে, শুধু সার্বক্ষণিক এমডি নেই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে কথা বলে কিছু কর্মচারী নিয়োগসহ সার্বক্ষণিক এমডি নিয়োগের চেষ্টা করবো।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের কাজ করতে হবে, একইসঙ্গে আইনও মানতে হবে। রোজিনার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে আইনি সুরক্ষা চাই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যেন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপব্যবহার না হয়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, সমন জারির পর যেন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ, অর্থ সম্পাদক মাসউদুল হক, ডিইউজের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, বিএফইউজে’র আবদুল মজিদ, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি রেজওয়ানুল হক রাজা ও সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ প্রমুখ।