ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কেউ থাকে না কবির পক্ষে

কিং সউদ
🕐 ৩:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০১, ২০২১

কেউ থাকে না কবির পক্ষে

একজন কবির আয়ের উৎস কী? বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের অগণিত কবির কাছে এ প্রশ্নের কি কোনো উত্তর আছে?
কবিতা ছাপা হলে বা পাঠ করলে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের কবিদের পত্রিকা বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে যে সম্মানী দেওয়া হয় তা নামমাত্র! সেটা কত? ধরুন এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। এর মধ্যে আবার সিনিয়র-জুনিয়র কবি ভেদে সম্মানীর তারতম্য ঘটে!
তো সারা মাসে বা সারা বছরে কবিতা লিখে কত টাকা/ রুপি আয় হয়? এক্ষেত্রে সবার আবার কবিতা সব জায়গায় ছাপাও হয় না বা ছাপা হলে অনেক পত্রিকাই টাকা/ রুপি দেয় না!

আলু পটল তেল নুন সাবান শ্যাম্পু ওষুধ থেকে শুরু করে বাসাভাড়া সবই তো দিতে হয়। কবি বলে তো কেউ ফ্রি এককাপ চাও খাওয়ায় না! তবে কবি কি করে বেঁচে থাকেন এই অর্থনৈতিক সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থায়?
হয় তাকে চাকরি করতে হয়, ব্যবসা করতে হয়, না হয় কারও দান-দয়ায় বেঁচে থাকতে হয়! আর এভাবে কি একজন কবি বাঁচতে পারেন? তার আত্মা, বোধ, বিবেক, বুদ্ধি, মেধা, আবেগ সব মৃত্যু রোগে ভুগতে থাকে। হীনম্মন্যতার, বিষণœতা, ব্যর্থতা তার নিত্যসঙ্গী হয়ে পড়ে!
এর জন্য কে দায়ী? সমাজ, সরকার, রাষ্ট্র নাকি কবি নিজেই? কে তাকে কবিতা লিখতে বলে? কবিতা না লিখে অন্য কত কী করে অর্থ আয় করা যায়। তা না করে কেন কবি শব্দ উপমা ছন্দ খুঁজে বেড়ান!
কবি তো এক একক! কবির দল নেই, গোষ্ঠী নেই, কবির পক্ষে কেউ থাকে না। কবিকে নাস্তিক বলে কেউ কেউ আনন্দ পায়। কবিকে নির্বাসিত হতে হয়, জেলের অন্ধকারে কবির দীর্ঘশ্বাস মিলিয়ে যায়! কবি ধুঁকে ধুঁকে রোগে শোকে মরে যায়। কবি মানেই এক অবহেলিত মানুষ! কবির কি সুদিন আসবে না?

দুই.
পার্টি এবং সরকার একাকার হয়ে গেলে আমলাতন্ত্র সেখানে ক্ষমতাসীন হয়ে ওঠে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার একটা নির্দিষ্ট মেয়াদে থাকলেও পার্টির কিন্তু কোনো মেয়াদ নেই। তাই পার্টিকে যত বলিষ্ঠ করা যায় সরকারে মেয়াদ তত বৃদ্ধি পায়, ক্ষমতার পাল্লা হয় আরও ভারি।
বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যতগুলো পার্টি এসেছে তাদের সবগুলোই সরকার গঠন কিংবা ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকার চর্চাটাই বেশি করেছে। এতে করে সাময়িকভাবে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পার্টি! ফলে সরকার থেকে ছিটকে পড়া মাত্রই পার্টি বেওয়ারিশ হয়ে গেছে!
আমলানির্ভর সরকার সব সময়ই সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে! থাকে সমন্বয়ের অভাব! পার্টির মধ্যে হয় না গণতান্ত্রিক চর্চা আর অযোগ্যরা চলে আসে নেতৃত্বে! কেবল আদর্শ, কেবল ক্ষমতা, কেবল অর্থ দিয়ে একটি পার্টি টিকতে পারে না! ইউনিয়নে, থানায়, জেলায় কর্মী কিংবা অফিস দিয়েও পার্টির ভিত্তি মজবুত করা যায় না।
যেকোনো পার্টিকে অবশ্যই জনগণের পক্ষে থাকতে হবে। জনগণই পার্টিকে টিকিয়ে রাখে। জনগণের ওপর থেকে যে পার্টি মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা যতই সরকারে থাকুক না কেন পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পার্টির মধ্যে যখন একক নেতৃত্ব, পারিবারিক চর্চা বেড়ে যায় তখন অন্য কর্মীরা হারিয়ে ফেলে আত্মবিশ্বাস। কর্মীদের যোগ্যতা, ত্যাগের যখন কোনো মূল্যায়ন হয় না তখন তারা অর্থ, ক্ষমতার অপব্যবহারে লিপ্ত হয়ে পড়ে! আর এর ফলে পার্টি দুর্বল হয়। মুমূর্ষু হয় দেশের জনগণ!
জনগণ তৃণমূল কিন্তু ছিন্নমূল নয়। ভোটব্যবস্থা, আসন বণ্টন, সংসদ, সংবিধান জণগণ চর্চা করে না ঠিকই কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে জনগণ জানে! তাপ যেমনি দেখা যায় না কিন্তু অনুভব করা যায় তেমনি পার্টি ও সরকারে না থাকলেও জনগণ অনুভব করতে পারে যে তারা বঞ্চিত, উপেক্ষিত এবং শোষিত।
কিছু বিক্ষোভ বিদ্রোহ সংগ্রাম আন্দোলন জনগণ হৃদয়ে লালন করে আর তা যে কোনো পার্টিকে, সরকারকে বিলুপ্ত করতে যথেষ্ট। তাই সরকারি পার্টি বা বিরোধী পার্টি যেটাই হোক না কেন পার্টির স্থায়িত্ব ও গ্রহণযোগ্যতার প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে পার্টির নেতৃত্বকে।

 
Electronic Paper