কবিতার বর্তমান
রহিম ইবনে বাহাজ
🕐 ২:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৯, ২০২০
কবিতার পাঠক কে? কবিতার প্রথম পাঠক কবি নিজেই! রাজধানী ঢাকা থেকে অনেক দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। শুক্রবার ও শনিবার সাহিত্য পাতা প্রকাশিত হয়। কিছু দৈনিকে কবিতা, গল্প, অনুবাদ, প্রবন্ধ, কবিদের মূল্যায়ন, সাহিত্য রসে রমরমা লেখা থাকে। যারা লেখে প্রথমে এখানে মুঠোফোনে ই-পেপার দেখে থাকে, ভোর হলেই হকার হতে সংগ্রহ শুরু।
এরপরে যা ঘটে, সামাজিক যোগাযোগব্যবস্থায় পুনরায় প্রকাশ করা হয়। এখানে কবিদের নির্দিষ্ট কিছু পাঠক থাকে, তারা পড়ে বিভিন্নজন ভিন্নমত পোষণ করেন। পাঠক সাহিত্যের জন্য পত্রিকা কেনে না, কবিদের ঠিকই কিনতে হয়। যেমন আমার কোনো লেখা প্রকাশিত হলে আমি অন্তত পাঁচ কপি কিনি। আর ছাপা না হলেও বিশেষ দৈনিকগুলো কিনি, পড়ি।
অনেককাল হতে শুনতে পাচ্ছি, কবিতার বাজার ভালো নয়, পাঠক কেন কবিতাবিমুখ। সত্যি কি তাই, আমি নগণ্য একজন বলছি, কবিতা পড়ার ধৈর্য নেই, বার, চৌদ্দ, ষোল, আঠার লাইন কবিতা পড়ার ধৈর্য নেই পাঠকের। কবিদের লেখা কবিদের পড়তে হবে, একালে কবিরা লেখার কৌশল আধুনিক শব্দঋণ করে ভাবের সঙ্গে অর্থপূর্ণ বাক্য জুড়ে, ব্যাপকতর সৃষ্টি করে। একটি উন্নতমানের চিন্তা-চেতনা অগ্রসর ভূমিকা রাখবে, যে শ্রেণির পাঠক বলে কবিতার বাজার ভালো নয়।
আমি বলব, তাদের সাহিত্যরসের ভাবের কমতি আছে। আজকাল সমকাল, পুরো বিশ্ব, এত এত কবি যার হিসাব করে ইতি টানা যাবে না। মন্দ ছন্দহীন, কম মাত্রা, বাক্যের বিন্যাসের বালাই নেই, তবু হরহামেশা কবিতা হয়ে যাচ্ছে!
সম্প্রতি একটি টিভি নাটকের এক অভিনয় শিল্পী, মুখ দিয়ে যা বলে তাই নাকি কবিতা হয়ে যায়। অথচ, কবিতার ‘ক’ বোঝার ধারণা তার ভিতরে আছে বলে মনে হয় না। শুধু কিছু দুষ্ট লোকের কারণে বাংলা সাহিত্যের মূল্যায়ন হয় না।
অনেক দৈনিকের সাহিত্য পাতা আছে, তারা স্বজনপ্রীতির ধার ধারে না, উন্নত মানের লেখা পেলেই গ্রহণ করে। আবার সাহিত্য সম্পাদকদের একটি চক্র আছে। হিন্দি সিরিয়ালের মতো ধারাবাহিকভাবে শুধু তাদের কবিতা, গল্প প্রকাশ করে থাকে। যুগ যুগ ধরে চলমান আছে এ ব্যবস্থা।
সাহিত্যের সমৃদ্ধি, সুন্দর মন মানসিকতার প্রয়োজন আছে। স্বপ্নের বীজ উৎপাদন গৃহে আনা সম্ভব অবশ্যই। সাহিত্যপাতা সম্পাদকদের মিনতি করে বলছি, কবির নাম নয়, লেখার মান দেখুন। তবেই না সার্থকতা পাবে পদ-পদবি কিংবা সাহিত্য!