অতলের ধারা : যে নামেই ডাকো
স্বপন নাথ
🕐 ১২:১০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২০
নবগঙ্গা নদীর হিথানে বা
ভুবনডাঙার বাঁকে
ঠেকালে মাথা টের পাই শুয়ে আছি
প্রিয়দর্শী ঘরে; কানে বাজে
চর্যার তিরাশি
যেন খুঁজে পাই জন্মযন্ত্রণার পুঁথি,
বাতাড়ি মেঘের ঝাপটায়
উলটেপালটে দেওয়া শিলামাটি;
তাড়ানিয়া, ঘুম ভাঙা
দুঃস্বপ্নের আঘাতে
কারে যেন খুঁজি,
যে দুঃখের শেষ নাই মনে
সকলের বগলদাবায় থাকে
মাদুলির গোষ্ঠীগান ও পুরাণ
সিলগালা বান্ধে আর
ঘোড়ার খুরের দাগে
পঞ্জিকা বুনে, শক্তির কবালায়
বেহাত জমিজিরাতÑ সব,
কেউ আর খোঁজে না ভয়েÑ
শিরদাঁড়া ভাঙে যদি, আর
মুক্ত হয় খাড়ল থেকে
ক্রোধারক্ত চোখ
আদিপুরুষের খুনদাগা হাত;
স্রোতে ভাইস্যা আসা ভুল
চিরল কচুরিপানার ফাঁকে
উঁকি দেয় পিছল সূর্যালোক;
উন্নাস ও চারণের ফাঁকে
আন্ধারে যারা করালিফুল ও
ফসলে ভরেছে উগার
তারা, শুধায় বারবারÑ
কী দেখো পানায় পানায়,
এ যে রঙ, বার্নিশ রঙ;
ধমকে, আস্ফালনে
ভিজে যায় মাটির পরান
হাজার বছরের পাথর চাপায়
নিঃশ্বাসগুলো
খনিজ সারের সুলভ দোকানে যায়,
যখন বলি- দাঁড়াও, দেখো ফেনায়িত রঙ
পাথরস্নাত ধাবমান; স্রোতে
যেখানে দাঁড়িয়ে আছি ঝরা বাঁকে
চাকে ও ঘূর্ণনে ভাইঙ্গা গেছে,
হারানো প্রিয়দর্শীÑ নব-গঙ্গা-পাখালি, কিছুই
না যায় দেখা, এ যে খুব নরম নদী
নিঠুর শাসনে চাপা স্থির
কোনো এক রাত্তির গভীরে
ধারা ঘুরে যায়
মুছে যায় ধ্যাবড়া পায়ের ছাপ
লাল বালুতে, আবছায়ায়
নানান রঙের ভর
বাতাসে ভাসে না শুধু দরইল স্বর
কাঁদে কচুরিপানা, মরা নদী কাঁদে,
যে নামেই ডাকো তারে, অতলে
ইক্ষাকু স্রোত, রুদ্রাক্ষের গানে
সন্ন্যাস জাগে।