ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

‘প্রতিষ্ঠান হয়ে গেলে লিটলম্যাগ থাকে না’

শামীম হোসেন, সম্পাদক, নদী
🕐 ১২:০৯ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২০

নদী’র প্রথম সংখ্যা কখন প্রকাশিত হয়? কেমন সাড়া পেয়েছিলেন?
প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল ২০০০ সালের জানুয়ারি মাসে। মাত্র ১৬ পৃষ্ঠার ছিল সংখ্যাটি। প্রকাশ পাওয়ার পর তেমন কোনো সাড়া পাইনি। কেবল পরিচিতজনরাই ছিল এর পাঠক। কাগজ প্রকাশের লক্ষ্য ছিল নতুন লেখকদের লেখা প্রকাশ। অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করিনি। অর্জনের ঝুলি যতটা কম তার চেয়ে বেশি পাল্লা ভারি বিসর্জনের। ছোটকাগজ সম্পাদনা যারা করেন তারাই কেবল হাড়ে হাড়ে টের পান, সম্পাদনা করতে এসে কী কী বিসর্জন দিতে হয়।

বর্তমানে লিটলম্যাগচর্চা কেমন হচ্ছে? আপনার দৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য ম্যাগ কোনগুলো?
দেখুন, এ কথা সত্য যে, আগের চেয়ে লিটলম্যাগচর্চা কমেছে। এর বহুবিধ কারণও রয়েছে। অনলাইনভিত্তিক চর্চাও একটা কারণ হতে পারে। কামরুল হুদা পথিক সম্পাদিত দ্রষ্টব্য, নাভিল মানদার সম্পাদিত জংশন, অনিকেত শামীম সম্পাদিত লোক, ওবায়েদ আকাশ সম্পাদিত শালুক, শিমুল মাহমুদ সম্পাদিত কারুজ, ওয়ালী কিরণ সম্পাদিত ক্রম, শহীদ ইকবাল সম্পাদিত চিহ্ন, বদরে মুনীর সম্পাদিত উটপাখি, শোয়েব শাহরিয়ার সম্পাদিত প্যারাডাইম, অনুপম হাসান সম্পাদিত রাঢ়বঙ্গ, রবু শেঠ সম্পাদিত পুনশ্চ, নাজমুল হাসান সম্পাদিত আবহ, কাজী শোয়েব শাবাব ও দেবাচার্য দেবশর্মা সম্পাদিত উত্তরা এক্সপ্রেস, পাভেল রহমান সম্পাদিত ক্ষ্যাপা’র কথা এ মুহূর্তে মনে পড়ছে। এর বাইরেও বেশকিছু উল্লেখযোগ্য লিটলম্যাগ রয়েছে।

লেখক সৃষ্টিতে লিটলম্যাগের ভূমিকা কতটুকু?
লেখক সৃষ্টিতে লিটলম্যাগের ভূমিকা অপরিসীম। নয়া লেখকদের লেখাজোখা কিন্তু লিটলম্যাগই লালন-পালন করে। আজকের অনেক প্রতিষ্ঠিত লেখকই লিটলম্যাগ থেকে উঠে এসেছেন। সম্পাদনা করতে হলে কিন্তু অপমান ও তিরস্কারকে সঙ্গী করে নিতে হয়। নানাবিধ প্রতিকূলতা পেরিয়ে আসতে হয়েছে। এর প্রধান বাধা অর্থসংকট। যা অনেক সময় উতরে আসা যায় না। লিটলম্যাগের নিজস্ব ইশতেহার থাকে। নতুন চিন্তা নিয়ে সবকিছু তছনছ করতে চায়। নিজেকেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে। সাহিত্যপত্রিকা দশে মিলে করি কাজের মতো। তবে হ্যাঁ, দুটো মাধ্যমে সাহিত্যের কাজ হচ্ছে।

সম্পাদনা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? বিদ্যমান বাস্তবতায় লিটলম্যাগচর্চার গুরুত্ব কতটুকু?
বর্তমান বাস্তবতাকে নিয়ে আমাদের ভাবার সময় এসেছে। যেভাবে এখন লিটলম্যাগ-কেন্দ্রিক চর্চা চলছে তা টিকিয়ে রাখা সামনে মুশকিল হয়ে যাবে। আগামীতে কবিতা ও চলচ্চিত্র, কয়েকজন নির্বাচিত কবি ও লেখককে নিয়ে নদীতে কাজ করার ইচ্ছে আছে।

কোনো কোনো লিটলম্যাগ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান হিসেবেও দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এটাকে কীভাবে দেখেন?
লিটলম্যাগ যদি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে তো আর লিটলম্যাগ থাকল না। তাকে শুধু প্রতিষ্ঠান হিসেবেই দেখতে চাই। ছোটকাগজের সঙ্গে বাণিজ্যিক কাগজের পার্থক্য দায়বদ্ধতার।

নদী’র প্রকাশিত সংখ্যা কতটি? বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কোন সংখ্যাটি, কেন?
মোট ১২টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে শেষ সংখ্যাটিকেই মনে করি। এর মূল বিষয় ছিল ‘আগামীর বাংলা কবিতা’। সেটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে।

কথাসাহিত্যের কাগজ হাতেগোনা। কবিতার কাগজ প্রচুর। এর নেপথ্য রসায়ন কী বলে মনে করেন?
কবিতা ও কথাসাহিত্যের কাগজ নিয়ে এভাবে ভাবা হয়নি। ফলে এর নেপথ্য রসায়ন নিয়ে আপাতত বলা যাচ্ছে না। লিটলম্যাগে গোষ্ঠীবদ্ধতা থাকতে পারে। তবে অপরকে ছোট করে নিজে মহৎ হওয়ার ভেতরে কোনো মাহাত্ম্য নেই।

দুই বাংলার লিটলম্যাগচর্চার মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য দেখতে পান?
মৌলিক কোনো পার্থক্য আমার চোখে পড়ে না। তবে দুই বাংলাতেই লিটলম্যাগের বাতিটা জ্বালিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।

 
Electronic Paper