ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

একাকিত্ব

এম. আজমানুল রহমান
🕐 ১২:০৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২০

পৃথিবী তখন মরণ ঘুমে, আমি জেগেছিলাম একাকিত্বের সঙ্গে! ঘড়ির প্রতিটি কাঁটার সঙ্গে সঙ্গী হিসেবে জেগে ছিল আমার স্মার্ট ফোনটি। মায়ের খাটের নতুন ওশারের বালিশটাতে শুয়েছিলাম সারারাত। চোখের পলক পড়েনি, নিষ্পলক তাকিয়ে ছিলাম একাকিত্বের সঙ্গী স্মার্ট ফোনটির দিকে। যতই হয় রাত গভীর। চারদিক থমথমে নিথর, শান্ত নীড়। একাকী নির্ঘুম রাত মিটিমিটি জোনাকির সঙ্গে কাটাচ্ছি।

রাতদুপুরে যে যার মতো সবাই নিঃসঙ্গ, চাঁদ তারাদের সঙ্গে রাতজুড়ে করছি রঙ্গ। চারপাশ থেকে ভেসে আসছিল জোনাকির আহ্বান। জানালার ফাঁকা দিয়ে কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে দেখা যাচ্ছিল আকাশে চাঁদ মামাকে। রাতদুপুরে যে যার মতো সবাই নিঃসঙ্গ। 

চাঁদ মামার পাশ দিয়ে ঘুরছিল তারা। চাঁদ তারাদের চলে রাতজুড়ে রঙ্গ। মাঝে মাঝে নিভে যায় চাঁদের উজ্জ্বল শিখা আকাশটা ঢেকে দেয় অবাঞ্ছিত কুহেলিকা।

শরীরজুড়ে শীতের হালকা ঠা-া। নির্ঘুম একাকিত্ব রাতের গল্পের শুরুটা এভাবেই হয়েছিল। রাত কি সত্যিই একাকিত্বের হয়? হয়ত হয় কিংবা হয় না। একাকিত্ব রাতের গল্প শেষ হয়েও হয় না। রাতের একাকিত্বের সঙ্গে সম্পর্ক আমার অনেক পুরনো। ইদানীং রাত শেষ হতে চায় না। যেন অন্তহীন। নির্ঘুম জেগে থাকি মৃত ঘুমের দুনিয়ায়।

প্রকৃতির নিয়মে যখন ভোর হয় তখনও আমাকে জড়িয়ে থাকে নিকষ কালো আঁধার। যখন সবাই রাতের আঁধার শেষে সূর্যের কিরণের সঙ্গে নতুন আশা নিয়ে দিন শুরুর উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা, আমি তখনও অমাবস্যার রাতের মতো কঠিন কালো একাকিত্বের জালে জড়িয়ে থাকি। একাকিত্বের রাত শেষ হয়েও হবে না কোনোদিন।

বুঝতে পারবে, কী আমার একাকিত্বের গভীরতা, তীব্রতা। তিলে তিলে নিজেকে একাকিত্বের সঙ্গে কষ্ট দিয়ে ভোরের দিকে এগিয়ে চলি।

রাত শেষে সূর্যের আলো উঠে ভোর হয়। একাকিত্ব চলে যায় রাতের শেষ প্রহরে।

আমার অবশ মনের দেয়ালজুড়ে রইল স্মার্ট ফোনটি আর মায়ের খাটের নতুন ওশারের বালিশটি।

স্মার্ট ফোনটি ড্যাবড্যাব চোখে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলছে, আমি সাক্ষী হয়ে থেকে গেলাম একাকিত্বের সেই রাতের!

 
Electronic Paper