অভিজ্ঞান সংক্রান্ত
মিলটন রহমান
🕐 ১২:৫৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৯
টনি মরিসন। আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ এই ঔপন্যাসিক আমার সেরা লেখকদের তালিকায় অন্যতম। প্রিয় এ ঔপন্যাসিকের রচনা পাঠমুগ্ধতায় বহুবার নিজেকে তার প্রেমিক ভেবেছি। যদিও লেখক হিসেবে টনি মরিসন আমার দাদির বয়সী! তার উপন্যাস ‘Beloved’ কিংবা ‘The Bluest Eze’ পাঠের পর দীর্ঘ সময় আমাকে ধ্যানস্থ হতে হয়েছে। প্রাসঙ্গিকভাবে তার একটি উক্তি আমার এক্ষনে খুব মনে পড়ছে। ‘There’s a difference between writing for a living and writing for life. If zou write for a living, zou make enormous compromises... If zou write for life, zou’ll work hard; zou’ll do what’s honest, not what pazs.’
টনি মরিসনকে আমার জীবনের লেখক মনে হয়েছে। কালোত্তীর্ণ লেখক হিসেবে তার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি কিংবা পুলিৎজার বা আমেরিকান বুক অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তি বিবিধ চিহ্ন তৈরি করেছে। কেননা তাকে সম্মান প্রদর্শন করতে পেরে আসলে পুরস্কারগুলোই সম্মানিত হয়েছে।
এবার আসি, কেন টনি মরিসনকে এ মুহূর্তে বেশি মনে পড়ছে সে প্রসঙ্গে। ওই যে মরিসন দুই ধরনের লেখকের কথা বলেছেন- এক. বাঁচার জন্য, দুই. জীবনের জন্য, সে বিষয়ে কথা বলব বলে। বাংলা সাহিত্যে এখন বিশেষ করে তরুণ লেখকদের মধ্যে ওই বেঁচে থাকার প্রবণতাবদ্ধ প্রবণতা দুর্লক্ষ্য নয়। কেবল লেখালেখিতেই নয়, ব্যক্তি জীবনেরও অনেকে এক প্রকার তামসিক দৈন্যতায় বসবাস করছে।
একজন লেখক হিসেবে যে প্রকরণবাদী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে, তাও বোধগম্যতার বাইরে। এই যে প্রক্রিয়া, পদ্ধতি বা শ্রেনিবিন্যাস যাই বলি- এ বিষয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর বিষয়ে রয়েছে অক্ষমতা কিংবা হীনম্মন্যতার ছাপ। মনে করি একজন ব্যাংকার, শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ডাক্তার মৌলিক লেখালেখির মাধ্যমে পোক্ত একটি অবস্থান করে নিয়েছেন। তাকে যদি আমি জীবিকার জন্য যে পেশা সেটির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ না করে লেখক কিংবা কবি বলি, তাতে তিনি সম্মানিত বোধ করেন।
কেননা একজন ব্যাংকার, শিক্ষক, ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার একজন লেখক অথবা কবির মতো স্বপ্নবাজ কিংবা মৌলিক হন না। ওই মানুষটিকে আমি যদি আমেরিকান আরেক ঔপন্যাসিক জর্জ মার্টিনের চোখে একজন আর্কিটেক্ট কিংবা গার্ডেনার হিসেবে দেখি- ‘I think there are two types of writers, the architects and the gardeners. The architects plan everything ahead of time, like an architect building a house. They know how many rooms are going to be in the house, what kind of roof they’re going to have, where the wires are going to run, what kind of plumbing there’s going to be. They have the whole thing designed and blueprinted out before they even nail the first board up. The gardeners dig a hole, drop in a seed and water it. They kind of know what seed it is, they know if planted a fantasy seed or mystery seed or whatever. But as the plant comes up and they water it, they don’t know how many branches it’s going to have, they find out as it grows. And I’m much more a gardener than an architect.
ÑGeorge R.R. Martin
তাহলে তো আর কোনো সংকট থাকে না। আপনি যাই বলুন আর্কিটেক্ট কিংবা গার্ডেনার হিসেবে একজন লেখককে চিহ্নায়নের ক্ষেত্রে হীনম্মন্য হলেই কি সব শেষ হয়ে যায়? যায় না। আমাদের অনেক অখ্যাত কবি-সাহিত্যিক আছেন যাদের রচনা এক একটি সময়ের খোদাই করা সুরম্য প্রাসাদ।
অতএব মৌলিক কাজের জন্য কারিগরকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করার বোধ তৈরি হওয়া জরুরি মনে করি। একজন সাধারণ মানুষ আরেকজন লেখককে মূল্যায়নে অপারগ হতেই পারে। কিন্তু অন্য একজন লেখক আরেকজন লেখককে চিহ্নিত করতে অপারগ হলে সেখানে কোনো উদ্দেশ্য কাজ করে।