বুকের উজানে
সেঁ জু তি ব ড়ু য়া
🕐 ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৮
আমার কর্ণফুলী, রাত্রিবেলা তার ভাঙা পাড়ে কে যেন সাজায় মিউজিক্যাল ঢেউ।
নদীর পাথরে সেই উপশম ফোটে, যদি না চঞ্চল রূপালী মাছগুলো জ্বরতপ্ত শরীরে
ছড়িয়ে যায় বর্ণচোরা স্রোত নিঃসঙ্গ বুদবুদে। নিমজ্জিত অর্কেস্ট্রা জল গাঙচিলের
বয়ানে অকপট সত্যস্বীকার করে—-‘এ-পাড় ও-পাড় ভেঙেও কী সাবলীল নদীকূল!’
কখনো কখনো নদীও গোপনে যেন ডানা মেলা ইকারুস, তখন অবিরাম পাতা
ঝরে মুমূর্ষু অশ্বত্থের। পাখির পালক গায়ে জলমগ্ন নদী গাছে গাছে দেখে মৃত
নদীদের কষ্টের বিজ্ঞাপন। ক্রমশ স্রোত ও কল্লোলে জেনে যায়-লোকালয়ে মৃত
নদীদের স্বপক্ষে শুধু মনোটোনাস গাছই কথা বলে এবং প্রকৃতি গাছেরও অধিক—-
মুক্তিতে বিশ্বাসী। ফলে স্বপ্নগ্রস্ত ঢেউ অযথাই নিরব হুলস্থুলে ক্ষরণের ব্যঞ্জনায়
মুক্তি ও সমতা খোঁজে। নিহিত পাতাল ছুঁয়ে বয়ে যায় আবেগতাড়িত প্লাবণভূমিতে!
আমিও কীভাবে কীভাবে রাত্রি খুঁড়ে, অলিতে-গলিতে ঘুরে—- বেদনাক্লিষ্ট নদীটিকে
খুঁজে আনি। দেখি, নক্ষত্রের অনুতপ্ত বলয়ে যে নদীটি ?দিনরাত বয়ে চলে—-তার
আশ্রমে শুধু দখলদারিত্ব, রেষারেষি, ভাগাভাগি...আমিও তাকে অনিবার্য ধ্বংস
থেকে দূরে ডেকে আনি বাতাসের সমাবেশে। বলে বলে যাই শুধু—-সহজ মৃত্যু রেখে
জ্বলে ওঠো এইবার, নষ্ট করো না সময় অযথা হা-হুতাশে, এ মাটি তোমার, এ
গতিপথ শুধু একান্ত তোমারি—-সব ছেড়ে ছুঁড়ে চলো সাহসী উদ্যমে! তোমার
রুদ্রনাচ অনেক দিন দেখি না! হে নৃত্যপটিয়সী নদী, পায়ে পরে নাও দ্যোতনা সৃষ্টি
ঘুঙুর—-ভয়ঙ্করী প্রলয় নৃত্যে গিলে নাও, গিলে নাও যতো অবৈধ স্থাপন, ঢেউয়ে
ঢেউয়ে ?বিভ্রমে দূরে রাখো সমস্ত হট্টগোল! এরপর সীমাহীন সমুদ্রে শুদ্ধ হয়ে চলে
এসো এই ধূপখোলা মাঠে। শীতের উৎসবে, পানপাত্র হাতে পাতা পোড়াবো দুজনে...