ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার

হালরং ডেস্ক
🕐 ১২:৫১ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৮, ২০১৯

১৯ বছরের একজন ছেলে যে কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। তার হঠাৎ করেই এক সপ্তাহ ধরে ঘুমের চাহিদা কমে যায়, সে মনে করতে থাকে যে সে না ঘুমিয়েও ভালো থাকতে পারে। তাছাড়া নিজেকে বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী মনে করে যেমন, সে চাইলেই দুনিয়া ধ্বংস করে দিতে পারে, অথবা কখনো নিজেকে আমেরিকার প্রসিডেন্ট দাবি করে।

এছাড়া সারাক্ষণ শারীরিক এবং মানসিকভাবে অস্থির থাকে এবং স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত কথা বলতে থাকে যার বেশিরভাগ কথার বিষয়বস্তুই খাপছাড়া এবং হঠাৎ অপ্রয়োজনীয় সব কাজে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে থাকে।

তার এই অবস্থা শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগে তার মধ্যে সম্পূর্ণ বিপরীত ধরনের কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমন, সে সারাক্ষণ মনমরা থাকত, কোনো কাজে আগ্রহ পেত না কিংবা জোর করে কন কাজ করলেও আনন্দ পেত না, কারো সঙ্গে কথা বলত না, একা একা থাকত, সারাদিন কোনো কাজ না করে না খেয়ে শুয়ে বসে দিন কাটাত এবং সারাদিনে প্রচুর ঘুমাত। আমরা দেখতে পাচ্ছি এই ব্যক্তির মধ্যে দুইটি অবস্থা বিরাজ করছে। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় তার এই সমস্যাকে বলা হয় বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার। এর দুটি পর্যায় রয়েছে, ম্যানিয়া অথবা হাইপোম্যানিয়া এবং বিষণ্নতা। উপরে বর্ণিত প্রথম অবস্থাটিই হচ্ছে ম্যানিয়া এবং দ্বিতীয় অবস্থাটি হচ্ছে বিষণ্নতা।

বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার একটি গুরুতর এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে। তবে আশার কথা হলো নিয়মিত এবং পরিমাণমতো ওষুধ গ্রহণ করলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ব্যক্তি পুরোপুরি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন। এ রকম অবস্থায় অনেকেই ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। যা সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। এজন্য একজন মানসিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন ব্যক্তি ইচ্ছামতো ওষুধ এর পরিমাণ পরিবর্তন না করেন। নিয়মিত ওষুধ খাওয়া ছাড়াও ব্যক্তি নিয়মিত ঘুমাচ্ছে কিনা সে দিকেও নজর রাখতে হবে।

সাধারণত বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডারে দেখা যায় যে, ব্যক্তি যখন কিছুটা সুস্থ বোধ করেন তখন অসুস্থতাজনিত ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে অধিক কাজ করতে থাকেন। ফলে ব্যক্তি অধিক চাপের মধ্য দিয়ে যান। এই রকম পরিস্থিতি ম্যানিয়া পর্যায়কে ট্রিগার করে।

সুতরাং বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার এ ব্যক্তির জীবন যাপনের ধরন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের ব্যক্তিদের দেখাশোনা করতে করতে দেখাশোনাকারীর মধ্যেও অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে রোগীর পাশাপাশি পরিচর্চাকারীকেও কোনো পেশাগত মনোবিজ্ঞানী এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে হবে।

 
Electronic Paper