বাটিকে ফ্যাশন ও আরাম
হালরং ডেস্ক
🕐 ২:১০ অপরাহ্ণ, জুলাই ০১, ২০১৯
কাপড়ের কিছু অংশে নকশা এঁকে তারপর নকশাটি মোম দিয়ে ঢেকে সেটা রঙে ডুবিয়ে যে পদ্ধতিতে কাপড় রং করা হয় তাকে বাটিক প্রিন্ট বলে। এক্ষেত্রে মোম লাগানো অংশে রং ঠিকমতো প্রবেশ করতে পারে না। ফলে তা অনবদ্য রূপলাভ করে। বাটিক প্রিন্ট শুধু কাপড়েই নয়, চামড়ার ওপরেও করা যায়।
বাটিক ছাপার ইতিহাস পর্যালোচনায় পাওয়া যায়, প্রাচ্য দেশসমূহ বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ার জাভা, বালিতে প্রথম এই কাজের প্রচলন ঘটে। বর্তমানে বাটিক প্রিন্টের কাপড় খুব জনপ্রিয়। বিশেষ করে হাল ফ্যাশনে বাটিক প্রিন্টের উপস্থিতি বেশ চোখে পড়ার মতো। বাটিক প্রিন্টের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ-ওড়না, স্কার্ট, ফতুয়া, স্কার্ফ, শার্ট, পাঞ্জাবি ইত্যাদি সবই দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ফলে তা আরামদায়ক ও ফ্যাশনেবল পোশাক হিসেবে সবার মনে সহজেই স্থান করে নিয়েছে। বাটিকের গজ কাপড় ও পাওয়া যায় বেশ সুলভে। তাই গজ কাপড় কিনে অনেকেই বানিয়ে নেন নিজের পছন্দমতো পোশাক।
দেশি বাটিক হাউসগুলোর মধ্যে পরিচিত নাম আনজুম ওয়ার্ল্ড। আনজুম ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার আনজুমান আফরীন জানান, গরমে সুতি কাপড়ের ওপর হালকা কাজ সব বয়সী এবং সব পেশার মানুষের এখন পছন্দের শীর্ষে। সুতির ওপর বাটিকের কাজ করা পোশাক এই গরমে স্বস্তিদায়ক তো বটেই, সেই সঙ্গে গরমের ফ্যাশনের এক দারুণ অনুষঙ্গও। তাই যারা একসঙ্গে ফ্যাশন এবং আরাম দুটোকেই বেছে নিতে চান তারা সহজেই তাদের পোশাকের পছন্দের তালিকায় বাটিক রাখতে পারেন।
গরমে সুতি কাপড়ে বাটিকের কাজ করা হালকা রঙের পোশাক আপনাকে দিতে পারে সারা দিনের স্নিগ্ধতা। কিশোরী থেকে শুরু করে কর্মজীবী নারীদেরও বাটিকের বাহারি পোশাকগুলো বেশ মানিয়ে যায়। বাটিকের গজ কাপড় পাওয়া যায় বেশ সুলভে। তাই গজ কাপড় কিনে অনেকেই বানিয়ে নেন নিজের পছন্দমতো পোশাক। বাটিকের শাড়ি যেমন পরতে পারেন প্রতিদিনের প্রয়োজনে, তেমনি পরতে পারেন উৎসব-অনুষ্ঠানেও। বিশেষ করে সিল্কের ওপর বাটিক প্রিন্টের শাড়ি আপনাকে যতটা স্বস্তি দেবে, ততটাই করবে আকর্ষণীয়।
সালোয়ার-কামিজ-ওড়নায় বাটিকের অনবদ্য কাজ পোশাকে আনে দারুণ মাধুর্য, সঙ্গে দেশীয় আবেশ জুড়ে যায় ব্যক্তিত্বে। জিনস, লেগিংস বা জেগিংসের সঙ্গে বাটিকের ফতুয়া বা টপ পরতে পারেন স্বাচ্ছন্দ্যেই। নতুন নতুন নকশা আর স্বল্পমূল্যের জন্য বাটিক ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় বরাবরই স্থান করে নেয়। এই গরমে ফ্যাশন হাউসগুলোয় বাটিকের সালোয়ার-কামিজ, ওড়না, ফতুয়া ও শাড়ির সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে। তবে গরমে স্বস্তিদায়ক বলে বাটিকের শাড়ির বিশেষ চাহিদা রয়েছে। ফ্যাশন হাউস স্টুডিও এমদাদের ডিজাইনার এমদাদ হকও বললেন এমনটাই। বর্তমানে মোম বাটিক অনেকটা উঠে গেলেও হ্যান্ড বাটিক, টাইডাই কিংবা ব্লক বাটিকের বেশ চল রয়েছে। হ্যান্ড বাটিকের কাজ করা রং-বেরঙের ওড়না, ফতুয়া, কামিজ সব বয়সেই সমান মানানসই।
বাটিকের শাড়ি যেমন পরতে পারেন প্রতিদিনের প্রয়োজনে, তেমনি পরতে পারেন উৎসব-অনুষ্ঠানেও! বিশেষ করে বাটিক প্রিন্টের সিল্কের শাড়ি আপনাকে করে তুলবে অতুলনীয়!
সালোয়ার-কামিজ-ওড়নাতে বাটিকের অনবদ্য কাজ পোশাকে এনে দেয় ঐতিহ্যের ছোঁয়া। জিন্স, লেংগিস বা জেংগিসের সঙ্গে অনায়াসে পরতে পারেন বাটিক প্রিন্টের ফতুয়া বা টপস। সঙ্গে থাকতে পারে বাটিক প্রিন্টেরই স্কার্ফ। বাটিক ছাপার স্কার্টের সঙ্গে একরঙা টপস মানিয়ে যায় বেশ। ছেলেদের পোশাকের ক্ষেত্রেও বাটিক প্রিন্টের তুলনা নেই! বিশেষ করে পালা-পার্বণে বাটিকের পাঞ্জাবি যেন টেন্ডে পরিণত হয়েছে। বাটিক প্রিন্টের শার্ট ও ফতুয়াও পোশাক হিসেবে তুলনাহীন। বিশেষ করে ক্যাজুয়াল বা সেমি-ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে বাটিক প্রিন্টের হাওয়াই শার্ট বেশ জনপ্রিয়।
বাটিকে রয়েছে স্নিগ্ধতার ছাপ। ক্যাজুয়াল বা সেমি-ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে বাটিক প্রিন্টের হাওয়াই শার্ট অনেকেই বেছে নেন। বিশেষ কোনো উৎসবে বাটিকের পাঞ্জাবি এখন যতটা আরামদায়ক, ঠিক ততটাই ট্রেন্ডি।
কোথায় পাবেন
ক্রাফট সেন্টারগুলোতে বাটিকের গজ কাপড় বা পোশাক পাবেন। ফ্যাশন হাউসগুলোর মধ্যে আনজুম ওয়ার্ল্ড ছাড়াও দেশাল, নবরূপা, চরকা, সোর্স, আরণ্যক, প্রবর্তনা, যাত্রা, নোঙর ইত্যাদিতে বাটিকের পোশাকের বিপুল সমাহার। এছাড়া গাউসিয়া, চাঁদনীচক, নিউমার্কেটসহ শহরের প্রায় সব মার্কেটেই বাটিক প্রিন্টের গজ কাপড় ও পোশাক পেয়ে যাবেন।
দামদর : বাটিক প্রিন্টের কাপড়ের দাম নির্ভর করে এর রঙের ওপরে। কাপড়ে প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহার হলে এর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। সালোয়ার-কামিজ (সেলাইবিহীন) পাবেন ৪৫০-২৫০০টাকা, সেলাইসহ ১২০০-৪৫০০ টাকা, শাড়ি ১২০০-৬০০০, ফতুয়া ৪৫০-১৫০০ টাকা, স্কার্ট ২৫০-১২০০ টাকা, ওড়না ৩৫০-১৫০০ টাকা, স্কার্ফ ১৫০-৫৫০ টাকা, পাঞ্জাবি ৬৫০-২০০০ টাকা, শার্ট ৪৫০-১২০০ টাকা। এছাড়া প্রতি গজ কাপড় পাবেন ১১০-৪৫০ টাকার মধ্যে। হ হালরং ডেস্ক