ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

এই বর্ষায়...

হালরং ডেস্ক
🕐 ১২:০৩ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০১৯

এখন বর্ষাকাল। বর্ষা মানেই যখন তখন বৃষ্টির হানা। বৃষ্টিতে ছাতা মাথাকে আড়াল করলেও, জামাকাপড় ভিজে যায়। আর ভেজা জামা-কাপড় নিয়ে অনেক সময়ই পড়তে হয় অস্বস্তিতে। বৃষ্টি তো আর থামানো সম্ভব নয়, কিন্তু এ সময় একটু চিন্তা করে কাপড় বাছাই করলে ঝামেলা ও অস্বস্তি কিছুটা এড়ানো সম্ভব।

আমাদের দেশের আবহাওয়ার জন্য সুতি কাপড় সবচাইতে বেশি আরামদায়ক। তবে বৃষ্টিতে সুতি কাপড় ভিজলে সহজে শুকাতে চায় না। তাই সুতি কাপড় এড়িয়ে জরজেট, সিল্ক ধরনের সিনথেটিক কাপড় পরা যেতে পারে। দেশের অন্যতম ফ্যাশন হাউস রং বাংলাদেশের মিডিয়া ম্যানেজার তৌসিক আহমেদ জানান, বৃষ্টি এলে যেমন কিছু সময়ের জন্য ঠাণ্ডা অনুভব হয়।

তেমনি রোদ উঠলে এবারও বাতাসের আর্দ্রতা শরীরে যেন গরম পানির ঝাপটা দেওয়ার অনুভূতি এনে দেয়। আর এমন আবহাওয়ার জন্যও পাতলা সুতি পোশাক আরামদায়ক। তবে বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়েও যেন অস্বস্তিতে পড়তে না হয় সেজন্য ঢিলেঢালা পোশাকও পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন।

ফ্যাশন সচেতনদের মতে এ সময় প্রিন্টের কাপড় পরা ভালো। কারণ হঠাৎ বৃষ্টিতে যদি কিছুটা ভিজেও যায় প্রিন্টের কাপড়ে তা কম বোঝা যাবে। যাদের সিনথেটিক কাপড়ে সমস্যা হয় না তারা হালকা সিল্ক, সিফন, জরজেট ইত্যাদি কাপড় পরতে পারেন। এতে কাপড় ভিজে গেলেও তা বোঝা যাবে না। আবার তাড়াতাড়ি শুকিয়েও যাবে। আর যে ধরনের কাপড়ই পরা হোক না কেন, এ সময় একটু ঢিলেঢালা পোশাক পরা ভালো। এতে বৃষ্টিতে ভিজলেও কাপড় গায়ের সঙ্গে লেগে দৃষ্টিকটু লাগবে না।
বিবিয়ানা ফ্যাশনের লিপি খন্দকার বলেন, ‘যারা শাড়ি পরে থাকেন তাদের জন্য এই মৌসুমে পাতলা সিল্ক এবং মসলিনের শাড়ি ভালো। আর যারা সালোয়ার কামিজ পরেন তারা ঢিলেঢালা সুতি বা সিনথেটিক কাপড়ের কামিজ পরতে পারেন। এ সময় বেশি লং কামিজ না পরে একটু শর্ট টপস, ফতুয়া বা কুর্তা পরলে বেশি ভালো লাগবে। বর্ষার রঙের কথা মনে হলেই চোখের সামনে ভাসে নীল। তবে এই সময় যে কোনো উজ্জ্বল রং দারুণ মানাবে।

তিনি আরও বলেন, বর্ষাকালে আমাদের গ্রাম-বাংলার ঝোপঝাড়ে ফোটে নানান ধরনের ফুল। আর এই ফুলগুলো হয় দারুণ সব উজ্জ্বল রঙের। তাই বর্ষায় শুধু নীল নয়, পরা যেতে পারে যে কোনো উজ্জ্বল রঙের পোশাক। যেমন-ম্যাজেন্টা, বেগুনি, গাঢ় সবুজ বা কলাপাতা সবুজ, লাল, হলুদ এই রংগুলো দারুণ লাগবে। তাই সব বিচারে চলতি মৌসুমে বেছে নিতে পারেন উজ্জ্বল রঙের ঢিলেঢালা সুতি বা সিনথেটিক কাপড়ের পোশাক।

তারুণ্যের বর্ষা
তরুণরা এই বর্ষায় জিন্সের সঙ্গে পরতে পারেন ফতুয়া। দেখবেন আপনার প্রিয় নীল জিন্সটি নিঃসন্দেহে এই বর্ষায় হয়ে উঠবে আপনার প্রিয় পোশাক। বর্ষায় নীল জিন্সের সঙ্গে নীলের কোনো ভিন্ন শ্যাডের ফতুয়া ব্যবহার করুন। সেই সঙ্গে পায়ে কনভাস কিংবা যে কোনো ক্যাজুয়াল স্নিকার্স মানিয়ে যাবে দারুণ।

বর্ষায় ছেলেদের জন্য বর্ষার ফ্যাশনের নীল উঠে আসে শার্ট, পাঞ্জাবি কিংবা ফতুয়ায়। বর্ষায় শার্টে শুধুই নীল রাখতে পারেন। কিংবা কোনো ট্রাইবাল টেক্সচারের নীল শার্ট আপনার স্মার্টনেসের পাশাপাশি আপনার রুচিরও বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে। বর্ষায় এমন কিছু ফতুয়া ব্যবহার করুন যেগুলো ভাপসা গরমের হাত থেকে আপনাকে রক্ষা করবে আর সেই সঙ্গে নীলের ছোঁয়া এনে দেবে প্রশান্তি। শার্ট ফতুয়ার বাইরে ছেলেরা বর্ষায় নীল শ্যাডের টি-শার্ট ব্যবহার করতে পারেন। তবে একটু ভিন্ন লুক আনতে ক্যাজুয়াল স্নিকার্সের সঙ্গে সাদা প্যান্ট আর ওপরে কোনো নীল শার্ট কিংবা টি-শার্ট পরুন, দেখবেন এই বর্ষায় সবার নজর আটকে যাবে ঠিক আপনার দিকেই।

সাধারণত বৃষ্টির সময় বা মেঘলা মেঘলা আবহাওয়ায় এমন পোশাকই নির্বাচন করা উচিত, যা বৃষ্টিতে ভিজলে দ্রুত শুকিয়ে যায়। আবার হুট করে রোদ উঠলেও অস্বস্তি তৈরি করে না। এক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কৃত্রিম তন্তুজাত কাপড়ই আপনাকে সুরক্ষিত রাখবে। তবে কৃত্রিম তন্তুজাত কাপড়ে যাদের এলার্জি আছে কিংবা যারা এ ধরনের কাপড় পড়ে স্বস্তি পান না তারা জর্জেট, সিল্ক কিংবা দেশি ভয়েল ধরনের কাপড়ের পোশাক পরতে পারেন। এছাড়া আমাদের দেশের রাজশাহী সিল্ক বা হাফসিল্ক, সুতি জর্জেট বা বেক্সি জর্জেটের তৈরি পোশাকগুলোও বর্ষার দিনে আপনাকে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়ানোর স্বাধীনতা দেবে।

সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি টিনএজার তরুণীদের পছন্দ টপস বা কুর্তা। সঙ্গে জিন্স বা চুড়িদার পায়জামার সঙ্গে ছোট ওড়না। বর্ষা ও রোদ একসঙ্গে সামলাতে থ্রি- কোয়ার্টার হাতা বেশ কাজের।

কোথায় পাবেন
দেশের নামকরা প্রতিটি ফ্যাশন হাউসে একটু খুঁজলেই নীল পোশাকের সন্ধান মিলে যাবে। তবে রাজধানীর নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, মৌচাক মার্কেট, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, রাইফেলস স্কয়ারসহ বেশকিছু শপিংমল থেকে আপনি একটু খুঁজলেই পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের পোশাক। ফ্যাশন হাউসগুলোর মধ্যে রয়েছে- রঙ, দেশীদশ, দর্জিবাড়ি, ব্যাঙ, স্টাইল পার্ক মুসলিম কালেকশন, আর বুটিক হাউসগুলোর মধ্যে রয়েছে- এক্সেল, লোকজ, বালুচর।

 
Electronic Paper