ম্যাচিং ম্যাচিং
হালরং ডেস্ক
🕐 ৪:০০ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০১৯
এখন আর আগের মতো একান্নবর্তী পরিবারের দেখা মেলে না। পরিবার ভেঙে এতটাই ছোট হয়েছে, এখন পরিবার বলতে শুধু স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানে সীমাবদ্ধ। আবার অনেকে নানা সমস্যার কারণে গ্রামে ঈদ করতে যেতে পারছেন না। ফলে ঈদ আনন্দেরও বিচিত্র এসেছে। বৈচিত্র্য এসেছে আনন্দের উপলক্ষগুলোতে।
ঈদ আনন্দকে একটি আলাদা রং এনে দিতে তাই বাবা-মায়ের চিন্তার শেষ নেই। ফলে সন্তানের সঙ্গে বাবা-মা ম্যাচিং করে ঈদের পোশাক পরতে পছন্দ করছেন। ফলে ম্যাচিং প্রবণতা বেড়ে গেছে। আবার নবদম্পতিরাও ঈদে ঘোরাঘুরি কিংবা কোনো পার্টিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে পোশাক হিসেবে ম্যাচিংকে বেছে নিচ্ছেন।
রঙ বাংলাদেশের মিডিয়া ম্যানেজার তৌসিক আহমেদ বলেন, এবারের ঈদে ম্যাচিং পোশাকের চাহিদা বেশি। এ কারণে অনেকেই বাবা-ছেলে, মা-মেয়ে কিংবা স্বামী-স্ত্রীর একই ধরনের পোশাক বাজারে আনছে। ‘স্টাইলিস্ট’ তরুণ-তরুণী, প্রেমিক-প্রেমিকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর পছন্দের শীর্ষে কাপল ড্রেস কিংবা ম্যাচিং ড্রেস। অনেক পরিবারেরও পছন্দ এই পোশাক। কাপল ড্রেসের ক্ষেত্রে থ্রি-পিস কিংবা শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং করে রাখা হয় পাঞ্জাবি। ফ্যামিলি প্যাকেজ হিসেবে রয়েছে ম্যাচিং করা চারজনের পোশাকও।
রাজধানীর মিরপুরে আড়ংয়ের একটি শাখায় ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন নবদম্পতি দীপা ও মারুফ। তারা একই নকশার শাড়ি ও পাঞ্জাবি খুঁজছিলেন। সেটা তারা পেয়েও যান। মারুফ হাসান হালরংকে জানান, যুগল পোশাক তো ফ্যাশন। প্রায় সব যুগলের পছন্দ। বিয়ের প্রথম ঈদ। তাই আমরা এ পোশাক কিনেছি।
রাজধানীর ছোট-বড় প্রায় সব ফ্যাশন হাউসেই মিলছে ম্যাচিং পোশাক। রঙ বাংলাদেশ, অন্যমেলা, অঞ্জনস, ইয়েলো, আড়ং, সাদাকালো, বিবিআনা, দেশাল, নিপুণসহ অনেক ফ্যাশন হাউসেই রয়েছে ম্যাচিং পোশাক। এ ছাড়া শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের দোকানগুলোতেও মিলছে এ ধরনের পোশাক। পোশাকের মানের ওপর দামের তারতম্য রয়েছে। তবে বেশির ভাগ পোশাকই দুই থেকে ১২ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে প্রথমবারের মতো বাবা-মায়ের সঙ্গে একই ডিজাইনের সন্তানের পোশাক এনেছিল সাদাকালো। তখন পোশাকটি জনপ্রিয় হয়েছিল। পরে অন্যান্য ফ্যাশন হাউসও ম্যাচিং পোশাক বাজারে আনে। তরুণ ডিজাইনার মারিয়া বিনতে সালাম বলেন, স্বামী-স্ত্রীর ম্যাচিং পোশাক তৈরিতে আমরা সাধারণত বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করেছি। শুধু একই রং নয়, মোটিফেও মিল আনার চেষ্টা করেছি। এর ফলে অনেক যুগলই ম্যাচিং পোশাকে আকৃষ্ট হচ্ছে। ম্যাচিং পোশাক শুধু সৌন্দর্য নয়, স্বামী-স্ত্রীকে যৌথ জীবনের অনুপ্রেরণাও দেয়। আবার যাদের পুরোপুরি ম্যাচিং পোশাক পছন্দ হচ্ছে না তারা একাধিক দোকান থেকে কাপড়ের পরিবর্তে রঙের ম্যাচিং করছে।
ফাতিমা রূপকথা আর তার স্কুলের বন্ধুরা অনেক আগে থেকে কোনো না কোনো উৎসবে এক রকমের পোশাক পরে থাকেন। তারা এবারেও ঈদে নতুন জামা কিনেছেন এক রকম। এবারের তাদের ঈদ আড্ডা তাই খুব জমবে বলে জানান। রূপকথার মতো টিনএজরা ম্যাচিংয়ে ঝুঁকছেন, কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একই রকমের ছবি পোস্ট করে আনন্দ উপভোগ করবেন বলে।