ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দুদকের অভিযোগপত্র

ওসি প্রদীপের ঘুষের টাকায় কোটিপতি স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৩৮ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২১

ওসি প্রদীপের ঘুষের টাকায় কোটিপতি স্ত্রী

কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকি কারন গৃহিণী হয়েও কোটিপতি। তার নামে রয়েছে দুটি বাড়ি, ফ্ল্যাট ও গাড়ি। আছে প্রায় অর্ধশত ভরি সোনা ও ব্যাংক হিসাবে নগদ টাকা। অথচ প্রদীপের নামে কোনো সম্পদই নেই। তার ‘ঘুষ ও দুর্নীতি’র মাধ্যমে অর্জিত অর্থে স্ত্রী এসব সম্পদ অর্জন করেন বলে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে।

ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির মামলা তদন্ত শেষে গত সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরের বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি করে কার ও মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাটের মালিক প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারন। তার ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকার। তার ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও তার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছে ২৯ জনকে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় নিহতের বোনের করা মামলায় প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গত ২৭ জুন অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। গত বছরের ২৩ আগস্ট প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রদীপের স্ত্রীর নামে থাকা গাড়ি, বাড়ি ও ব্যাংক হিসাব রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে রাখার জন্য গত ২৯ জুন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ নির্দেশ দেন।

ওসি প্রদীপের দুটি বাড়ির মধ্যে একটি ‘লক্ষ্মী কুঞ্জ’। চট্টগ্রাম নগরের ব্যস্ততম কোতোয়ালি মোড় থেকে আধা কিলোমিটার গেলেই পাথরঘাটা আর সি চার্চ রোডে ছয়তলার আলিশান এ বাড়ি। বাড়িটি এলাকায় সবার কাছে পরিচিত। চারদিকে সিসি ক্যামেরার নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ওই বাড়ির প্রতিটি ফ্লোর ১ হাজার ৪৫০ বর্গফুট। প্রতি তলায় দুই ইউনিট করে বাসা রয়েছে। আর চতুর্থ তলার দুটি ইউনিট এক করে সেখানে পরিবার নিয়ে থাকতেন ওসি প্রদীপ। ওপরতলার এক ভাড়াটে জানান, বেশ কিছুদিন ধরে বাসায় থাকছেন না বাড়িওয়ালা। তারা এক ইউনিটে মাসে ১৬ হাজার টাকা করে ভাড়া দেন। দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, সম্পদ বিবরণীতে চুমকি বোয়ালখালীতে থাকা খামারের মাছের ব্যবসা থেকে ২০০২ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে দেড় কোটি টাকা আয় দেখিয়েছেন। কিন্তু তা আয়কর রিটার্নের উল্লেখ নেই। চুমকি ভুয়া মাছের ব্যবসা দেখিয়েছেন।

প্রদীপ গ্রেফতারের পর থেকে পলাতক তার স্ত্রী চুমকি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, চুমকি কারনকে গ্রেফতারে দুদকের অভিযান চলছে।

 
Electronic Paper