আবরার হত্যা
দুই হাজার টাকা মুচলেকায় প্রথম আলো সম্পাদকের জামিন
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় চার সপ্তাহের আগাম জামিন শেষে আবারও জামিন পেয়েছেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। হাইকোর্ট থেকে মতিউর রহমানের নেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষের দিকে হওয়ায় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) নিম্ন আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। ঢাকার ভারপ্রাপ্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলাম শুনানি শেষে ২ হাজার টাকা মুচলেকায় তাকে জামিন দেন।
শুনানি শেষে ঢাকার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে প্রথম আলোর সম্পাদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এহসানুল হক সমাজী, প্রশান্ত কর্মকার, চৈতন্য হাওলাদার, মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে গত ২০ জানুয়ারি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের চার সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হকসহ বাকি পাঁচজনকে অভিযোগ গঠন বা অন্য কোনো প্রতিবেদন দাখিল না করা পর্যন্ত গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশও দেন আদালত।
এ মামলায় গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রথম আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ এ মামলায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরপরই বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ জনের নামে পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়া হয়।
এরপর ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আর্জি জানান প্রথম আলো সম্পাদকসহ ছয়জন। জামিন আবেদনকারী অপর পাঁচজন হলেন- প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক, জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক।
বাকি চার আসামি কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জসীম উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার জামিনের আবেদন করেননি।
গত ১ নভেম্বর মোহাম্মদপুরে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় আবরার। মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল প্রথম আলোর কিশোর সাময়িকী কিশোর আলো। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান কিশোর আলোরও প্রকাশক আর কিশোর আলোর সম্পাদক হলেন আনিসুল হক।
৬ নভেম্বর আবরারের বাবা মো. মুজিবুর রহমান প্রথম আলো সম্পাদকসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
মামলায় মুজিবুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘১ নভেম্বর তার ছেলে নাইমুল আবরার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে কিশোরদের ম্যাগাজিন কিশোর আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।’ আদালত সেদিন নালিশি মামলাটি আমলে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।
প্রতিবেদনে মতিউর রহমান ও আনিসুল হক ছাড়াও কবির বকুল, শুভাশিস প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম, শাহপরাণ তুষার, জসিম উদ্দিন তপু, মোশারফ হোসেন, মো. সুমন ও কামরুল হাওলাদারকে ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।