দীপন হত্যার বিচার
প্রথম দিনেই সাক্ষ্য দিতে আসেননি স্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:১৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরুর প্রথম দিনে হলো না সাক্ষ্যগ্রহণ। সোমবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি বলে জানান ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির।
সাধারণত মামলার বাদীর জবানবন্দি নেওয়ার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এই মামলার বাদী দীপনের স্ত্রী রাজিয়া রহমান কেন অনুপস্থিত ছিলেন, তা জানা যায়নি।
সাক্ষী হাজির না হওয়ায় ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান আগামী ১ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ঠিক করেন। হত্যাকাণ্ডের চার বছর পর গত ১৩ অক্টোবর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
আসামিরা হলেন- সেনাবাহিনীর বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া ও আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে স্বাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার ও শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের।
এদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক থাকায় গত ১৯ মার্চ ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এরপর গত ১৬ মে তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়।
লেখক-প্রকাশক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের ওপর ধারাবাহিক হামলার মধ্যে ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ে আক্রান্ত হন দীপন। তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
একই দিন রাজধানীর লালমাটিয়ার সি ব্লকে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে হানা দেয় দুর্বৃত্ত দল। তারা প্রকাশক আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল, ব্লগার তারেক রহিম ও লেখক রণদীপম বসুকে কুপিয়ে আহত করে। তার আগে ওই বছরই বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলা চলার সময় টিএসসিতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়কে। জাগৃতি ও শুদ্ধস্বর দুই প্রকাশনা থেকেই বিজ্ঞান লেখক অভিজিতের বই প্রকাশিত হয়।
দীপন হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় তার স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছিলেন। দীর্ঘ তদন্তের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) সহকারী পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান গত বছরের ১৫ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম দীপন হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের নেতা জিয়ার পরিকল্পনা এবং নির্দেশেই দীপনকে হত্যা করা হয়।