১০ দিনের রিমান্ডে জি কে শামীম
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:২৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
অবৈধ অস্ত্র ও মাদক মামলায় যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় পাঁচদিন ও মাদক মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এ ছাড়া তার সাত দেহরক্ষীকে অস্ত্র মামলায় চারদিনের রিমান্ডের অনুমতি দেন আদালত।
সাত দেহরক্ষী হলেন- দেলোয়ার হোসেন, মুরাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, সহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, সামসাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।
শনিবার তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে নেওয়া হয়। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জি কে শামীমের বিরুদ্ধে দুই মামলায় ১৪ দিন ও সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
অন্যদিকে শামীমের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার পৃথক পৃথক রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। শনিবার দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে শামীম ও তার সাত বডিগার্ডকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।
গুলশান থানার ডিউটি অফিসার এসআই মো. সাদেক জানান, তাদের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র ও মানি লন্ডারিংয়ে তিনটি মামলা হয়েছে।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর গুলশানের নিকেতনের অফিসে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব। অভিযানে এক কোটি ৮০ লাখ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে এফডিআর (স্থায়ী আমানত) পাওয়া যায়, যার মধ্যে তার মায়ের নামে ১৪০ কোটি ও ২৫ কোটি টাকা তার নামে। পাওয়া যায় মার্কিন ডলার, মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র।
শামীমকে ধরতে শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে সাদা পোশাকে শুরু হয় র্যাবের অভিযান। বিকাল সাড়ে ৪টায় অভিযান শেষে শামীমসহ আটজনকে আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, জি কে শামীমকে টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, যদি তিনি নির্দোষ হন, তাহলে কোর্টে এগুলোর ব্যাখ্যা দেবেন। আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়েছি, কোর্টে তার বক্তব্য সঠিক হলে তিনি ছাড়া পাবেন।
কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের শফিকুল ১০ দিনের রিমান্ডে
অস্ত্র ও হলুদ রঙের ইয়াবাসহ আটক রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদ আক্তার শুনানি শেষে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করেন। এর আগে ধানমন্ডি থানায় করা অস্ত্র ও মাদক আইনের পৃথক মামলায় ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পারভেজ গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন। গতকাল সকালে র্যাব বাদী হয়ে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে।
এর আগে গত শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে শফিকুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়। রাত সোয়া ৭টার দিকে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযান শেষে রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-২ অধিনায়ক আশিক বিল্লাল জানান, অভিযানের সময় শফিকুলের কাছে সাত প্যাকেট হলুদ রঙের ইয়াবা পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ধরনের ইয়াবা পাওয়া যায়নি। এ ইয়াবায় কোনো প্রকার গন্ধ নেই। এটা নতুন আবিষ্কার।
তিনি বলেন, অভিযানে একটা বিদেশি পিস্তলসহ তিন রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ক্যাসিনোতে খেলার কয়েন, স্কোরবোর্ড ও ৫৭২ প্যাকেট তাস উদ্ধার করা হয়েছে। কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের যেসব জিনিস পাওয়া গেছে, ধারণা করা হচ্ছে আগে এ ক্লাবে ক্যাসিনো খেলা হতো।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে র্যাবের হাতে আটক হন ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া। অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুই মামলায় তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতার বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারপরই ছাত্রলীগের পদ হারান শোভন-রাব্বানী। এরপর আটক হন খালেদ। শুক্রবার যুবলীগের অপর আলোচিত নেতা জি কে শামীমকে নিকেতনের নিজ কার্যালয় থেকে আটক করা হয়। তিনি রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত।
শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে জি কে শামীমের নিকেতনের ডি ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাসা ঘিরে ফেলে র্যাব। শামীমের সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীকেও আটক করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ১ কোটি ৮০ লাখ নগদ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর (স্থায়ী আমানত)। এর মধ্যে তার মায়ের নামে ১৪০ কোটি টাকা ও ২৫ কোটি টাকা তার নামে।