ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ২:৫৮ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০১৯

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে এবং তা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেননি আদালত। সেইসঙ্গে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস শামস জগলুল হোসেনের আদালতে তার জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন আইনজীবী মাসুমা আক্তার।

এদিকে সোমবার বেলা ২.২০টা তাকে আদালতে এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও মোয়াজ্জেম হোসনকে আদালতে তোলা হয়নি।

এ সময় আদালতে মামলার বাদী ব্যারিস্টার সুমন উপস্থিত আছেন।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে হাজতখানায় রাখা হয়। রোববার শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা মোয়াজ্জেমকে আজ সকালে ফেনীর সোনাগাজী পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এরও আগে ফেনীর সোনাগাজী থানায় তার অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট (গ্রেফতারি পরোয়ানা) থাকায় সেই থানার পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল সকালে ঢাকায় আসে। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ফেনী পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।

গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। এ সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।

ওই ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি খতিয়ে দেখতে ১৩ এপ্রিল ডিআইজি এসএম রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ২ মে প্রতিবেদন পুলিশ সদর দফতরে জমা দেয়। ফেনীর এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার এবং সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, এসআই ইকবাল ও এসআই ইউসুফের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।

রাফির পরিবার ও এলাকার সচেতন মহলের অভিযোগ, ওসির মদদে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা এলাকায় দাপট নিয়ে চলতেন। একাধিকবার অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে ছাত্রী নিপীড়নের গুরুতর অভিযোগ উঠলেও তার কোনো সুরাহা হয়নি। সাহস ও প্রতিবাদ নিয়ে রাফি রুখে দাঁড়ানোয় বেরিয়ে এসেছে সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসা ঘিরে নানা অপকর্মের কাহিনী।

 

 
Electronic Paper