ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আদালতকে কারা কর্তৃপক্ষ

খালেদা জিয়া ঘুমাচ্ছেন, তাই হাজির করা সম্ভব হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৭:২৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯

নাইকো দুর্নীতি মামলায় আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উপস্থিত না হওয়ার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, খালেদা জিয়া ঘুমাচ্ছেন, তাই তাকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি।

বুধবার পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-৯-এ দুপুর ১২টার পর এজলাসে ওঠেন বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।

এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়াকে আদালতে আনা হয়নি। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ।

আদালত তখন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান, ‘খালেদা জিয়া কোথায়?’ এ সময় এজলাসে উপস্থিত কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি আদালতকে জানান, ‘খালেদা জিয়া ঘুমাচ্ছেন। তাই তাকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি।’

আদালত এ সময় বলেন, একজন আসামি অনুপস্থিত থাকায় অভিযোগ গঠন আজ সম্ভব নয়। তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ। এ জন্য ঘুম থেকে উঠতে পারেননি।’ খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় অবহেলা করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এর জবাব দিতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘খালেদা জিয়া সম্মানিত নারী। জেল কোডের বিধান অনুযায়ী তিনি চিকিৎসা পাবেন।’

খালেদা জিয়ার আইনজীবী আদালতে বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ। তার চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালত তখন জানান, এ ব্যাপারে আজই তিনি আদেশ দেবেন।

এ সময় আদালতে উপস্থিত মামলার আসামি মওদুদ আহমদ দুদকের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ‘খালেদা জিয়াকে কেন আদালতে আনা হলো না? এর উত্তর আমাদের জানতে হবে। আদালতে আসা না আসা খালেদা জিয়ার ওপর নির্ভর করে না। তিনি গুরুতর অসুস্থ।’

মওদুদ আহমদের এমন কথার জবাব দিতে গিয়ে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, খালেদা জিয়া ঘুমিয়ে আছেন, তা তো কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়ে গেছেন।

মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষ কি খালেদা জিয়াকে আনতে পারেন না? পারেন। কিন্তু উনি সম্মানিত ব্যক্তি। আমরাও তাহলে কর্তৃপক্ষকে বলব, যেভাবে পারেন আনবেন। কিন্তু তিনি আসেননি। তিনি গুরুতর অসুস্থ, এ জন্য ঘুম থেকে ওঠেননি-এমন কথা ঠিক নয়।’

মওদুদ তখন দুদকের আইনজীবী মোশাররফকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘খালেদা জিয়া ঘুমিয়ে আছেন মানে কী?’ জবাবে দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘খালেদা জিয়া দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছেন।’

তখন উপস্থিত আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সমস্বরে বলে ওঠেন, খালেদা জিয়া এর আগে ঠিকই আদালতে হাজির হয়েছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আদালতে না আসা নিয়ে যখন দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক চলছিল, তখন বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আরেক আসামি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষ তো আমাকে বলে গেছেন কী কারণে খালেদা জিয়া আদালতে আসেননি।’

এরপর বিচারক নাইকো দুর্নীতি মামলার পরবর্তী অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ মার্চ ঠিক করে এজলাস ত্যাগ করেন।

নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচার যে আদালতে চলছে সেটি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে স্থাপিত। ওই পরিত্যক্ত কারাগারের একটি কক্ষে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল টাস্ট দুর্নীতি মামলায় যথাক্রমে ১০ ও ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন খালেদা জিয়া।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়।

 
Electronic Paper