খুলনায় টিকা কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা চরমে
সিরিয়াল ভঙ্গ ও স্থান সংকট, ভোগান্তির শিকার মানুষ, নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই
মো. জামাল হোসেন, খুলনা
🕐 ১:৩৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০২১
খুলনা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। সিরিয়াল ভঙ্গ করা ও স্থান সংকটের কারণে মানুষের সমাগম ও টিকা দেওয়ার এসএমএস জটিলতা নিয়ে টিকা কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে টিকা গ্রহীতাদের বেগ পেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না। নগরীর পশ্চিম বানিয়াখামার বিহারি কলোনির বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব সুফিয়া খাতুন টিকা নেওয়ার জন্য খুলনা জেনারেল হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রের সামনে গতকাল সোমবার সকাল ৯টায় এসে লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু লাইনের সিরিয়াল এগোয় না বলে তিনি অভিযোগ করেন। বেলা সোয়া ১১টায় তিনি এসএমএস চেক পয়েন্টের সামনে পৌঁছান। এর আগে পেছন থেকে এসে আরেক মহিলা কাগজপত্র দেখিয়ে ভিতরে টিকা দিতে চলে যান। সুফিয়া খাতুন সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সুফল পাননি।
স্বামীর সঙ্গে টিকা নিতে আসা নগরীর খালিশপুর পোড়া মসজিদ এলাকার বাসিন্দা তানজিয়া খানম অভিযোগ করে বলেন, আমার বাসা খালিশপুর এলাকায়। আমার টিকা কেন্দ্র খালিশপুরস্থ তিতুমীর নেভি ক্যাম্পে। সেখানে না দিয়ে আমাদের জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখানে প্রচণ্ড ভিড়। একে অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়াতে হচ্ছে। অনেক কষ্ট করে বুথে গিয়েছি। সেখানেও আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর টিকা নিয়েছি। তাছাড়া এখানকার ব্যবস্থাপনা মোটেও ভালো না। সিরিয়াল বজায় রাখা হয় না। সবকিছুর পরিবেশ বাজে। পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র নেই। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর আধাঘণ্টা ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের টিকা দেওয়ার পর বুথ থেকে বিদেয় করে দেওয়া হয়েছে।
নগরীর গল্লামারী ব্যাংক কোয়ার্টারের বাসিন্দা মাহাতাবুর রহমান সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে টিকা গ্রহণের আবেদন করেছিলেন। এখনো মোবাইলে কোনো এসএমএস আসেনি। তিনি শুনেছেন, এসএমএস ছাড়া টিকা দেওয়া যায়। তাই সকাল ৯টায় কেন্দ্রে এসে টিকা দেওয়ার জন্য দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সেখানে অপেক্ষা করেন। অপেক্ষার ফলাফল না পেয়ে তিনি হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এস এম মুরাদ হোসেন জানান, এখানে জায়গার অনেক স্বল্পতা। মানুষ সচেতন না। যতক্ষণ তারা নিজেদের ব্যাপারটা বুঝতে পারবে ততক্ষণ আমরা এ অদৃশ্য শত্রুর মোকাবিলা করতে পারব না।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি বলেন, অনেকেই অনেক ধরনের অভিযোগ করবে। সেটা ধরা যাবে না। আমরা নিয়মমাফিক আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। গতকাল সোমবার এ কেন্দ্র থেকে সাড়ে ৮শ’ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।