ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

খুলনার রাস্ট্রায়ত্ব পাটকল লীজ প্রক্রিয়ায় ভারতীয় দুই প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ

খুলনা ব্যুরো
🕐 ১০:০০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০২১

খুলনার রাস্ট্রায়ত্ব পাটকল লীজ প্রক্রিয়ায় ভারতীয় দুই প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ

খুলনার রাস্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলো লীজ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বন্ধ পাটকল পুনরুজ্জীবিত করতে লীজ দিতে দরপত্র আহবান করা হয়। এর মধ্যে ক্রিসেন্ট, ইস্টার্ণ, দৌলতপুর, জেজেআই ও কার্পেটিং মিলের জন্য ভারতীয় দুই প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছে। তবে প্লাটিনাম, খালিশপুর ও স্টার জুট মিলের ক্ষেত্রে দেশী-বিদেশী কারও সাড়া মেলেনি।

১৭ জুন ছিল দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। গেল বছরের ১ জুলাই থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলগুলো বন্ধ করা হয়।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৫৪ সালে ভৈরব নদের তীরে বেশিরভাগ পাটকল ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে ওঠে। এখানকার অধিকাংশ পাটকলের মালিক ছিল পাকিস্তানের আগাখান শিল্প গ্রুপ। ১৯৭২ সালে এসব মিল জাতীয়করণ করা হয়। বিদেশে নতুন বাজার সৃষ্টি না হওয়া, কাঁচা পাটের মূল্য বৃদ্ধি, দিন রাতে অব্যাহত লোডশেডিং এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাবে ক্রমাগত লোকসানের কারণে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় গত ১ জুলাই এখানকার ৭টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে। মালিকানা নিয়ে বিরোধ থাকায় আলীম জুট মিলের ব্যাপারে কোন স্বিদ্ধান্ত নেওয়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সম্ভব হয়নি। মিল বন্ধ ঘোষণা করার পর গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় ৭ মিলের ৩৬ হাজার ৩৯৫ জন শ্রমিকের পাওনা বাবদ নগদ ৭২৯ কোটি টাকা এবং ২৭৩ কোটি টাকার সঞ্চয় পত্র দিয়ে পাওনা পরিশোধ করা হয়।
বন্ধ মিলে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকার পাটকলগুলো ৯৯ বছর মেয়াদে লীজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বন্ধ পাটকলগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু হবে। মালিকানা থাকবে সরকারের হাতে। লীজ গ্রহীতারা চালু করতে না পারলে মিলগুলো ফেরত নেওয়া হবে।

বিজেএমসির চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রউফ বলেন, প্লাটিনাম ও আরও দু’টি পাটকলের জন্য দেশি বিদেশী কারও সাড়া মেলেনি। ক্রিসেন্টসহ অপর মিলগুলো লীজ নিতে ভারতের মোহন জুট ও প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল দরপত্র জমা দিয়েছে। যাচাই বাছাই শেষে শর্ত পূরণ হলে ডিসেম্বরে মিল চালু হবে। ইতোমধ্যে ইনভাইটেশন ফর এক্সপ্রেশন অফ ইনটারেস্ট (ইওআই) স্তর শেষ হয়েছে, চূড়ান্ত কাজ ২০২১ সালের মধ্যেই সমাপ্ত হতে পারে। এরপরই লিজ গ্রহীতাদের হাতে হস্তান্তর করা হবে।

বিজেএমসির খুলনা জোনের মহাব্যবস্থাপক মোঃ গোলাম রব্বানী বলেন, গত অক্টোবরে প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিল লীজ গ্রহণের জন্য চীনের একটি প্রতিষ্ঠান এবং ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য জুট মিলের জন্য করিম গ্রুপের প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করেন। পরবর্তিতে তারা পিছিয়ে যায়। মালিকানা নিয়ে বিরোধ হওয়ায় আলীম জুট মিল এর আওতায় আসবে না। বন্ধ মিলের শ্রমিকদের এক হাজার ২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। মিলগুলোর উৎপাদিত সকল প্রকার পাটজাতদ্রব্য বিক্রি হয়ে গেছে।

ক্রিসেন্ট জুট মিলের প্রকল্প প্রধান খান কামরুল ইসলাম জানান, শুধুমাত্র এ জুট মিলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিদ্যুৎ, টেলিফোন, পানি ও কর্মচারির বেতন দিয়ে প্রতি মাসে এক কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। তিনি জানান, রূপালী ব্যাংক শামস ভবন শাখায় এ মিলের ধার দেনা চার শো কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, বিজেএমসির মালিকানাধীন জুটমিলগুলোর বার্ষিক কাঁচা পাটের চাহিদা ১৯ লাখ ১১ হাজার মণ। বার্ষিক উৎপাদন হোসিয়ান ৩২ হাজার ৮শ’ মেট্রিকটন, স্যাকিং ৬৫ হাজার ৯৩ মেট্রিকটন ও সিবিসি ৭ হাজার ৮শ’ মেট্রিকটন। যাত্রার শুরুতে মিলের শ্রমিক ছিল ২০ হাজার ৬১৬ জন। বন্ধ থাকার আগ পর্যন্ত ৭ মিলের শ্রমিক ৩৬ হাজার ৩৯৫ জন। তার মধ্যে স্থায়ী ১০ হাজার ৩৬৪ জন ও বদলী শ্রমিক ২১ হাজার ৩৯১ জন। বাকিরা অবসরের শ্রমিক।

 

 
Electronic Paper