ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঐতিহ্য হারাচ্ছে তিন গম্বুজ মসজিদ

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
🕐 ১১:০১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ০৫, ২০২১

ঐতিহ্য হারাচ্ছে তিন গম্বুজ মসজিদ

নাটোরের লালপুর উপজেলার বাওড়া গ্রামে ৪০০ বছরের পুরাতন তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি অযত্ম অবহেলায় পড়ে আছে। এক কাতারের এ মসজিদে সরকারি সুদৃষ্টি না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

জানা যায়, মসজিদটি ১৩৮ শতাংশ জমির ওপরে নির্মিত। এর বহির্দেয়ালের উত্তর-দক্ষিণে ৩১ ফুট ৬ ইঞ্চি, পূর্ব-পশ্চিমে ১৩ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং উচ্চতা ১১ ফুট ৬ ইঞ্চি। মসজিদটির প্রতি দেয়ালের পুরুত্ব ৩ ফুট। মসজিদের চার কোণে চারটি অষ্টভুজাকৃতির বুরুজ রয়েছে। বুরুজগুলো কার্নিশ ছেড়ে শুরু হয়ে ছত্রি দ্বারা সমাপ্ত। ছাদ থেকে প্রতিটি ছত্রির উচ্চতা ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি। প্রতিটি ছত্রির শীর্ষ পদ্মকলি সজ্জিত। মসজিদেও ভেতরে উত্তর-দক্ষিণে ২৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ও পূর্ব-পশ্চিমে ৭ ফুট ৬ ইঞ্চি।

নামাজ গৃহে প্রবেশের জন্য পূর্ব দেয়ালে তিনটি অর্ধ-বৃত্তাকার খিলান বিশিষ্ট প্রবেশ দরজা রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালেও এ ধরনের দুটি প্রবেশ পথ ছিল। সেগুলোকে পরবর্তীকালে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভূমি থেকে কার্নিসের উচ্চতা ১১ ফুট ৬ ইঞ্চি। মসজিদের ভেতরে নামাজ আদায়ের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১০ সালে মসজিদ সংলগ্ন পূর্বদিকে নতুনভাবে একতলা ভবন নির্মাণ করে নামাজ গৃহকে বর্ধিত করা হয়। যার ফলে মসজিদটির আদি ও অনুপম স্থাপত্য-সৌন্দর্য অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মসজিদটিতে দশটি স্বল্পগভীর বিশিষ্ট ক্ষুদ্রাকৃতির কুলঙ্গি রয়েছে। ইট, চুন ও সুরকি দিয়ে গাঁথা মসজিদটির ভেতরে ও বাইরে সুদৃশ্য নকশা করা আছে। একসাথে ১৫-২০ জন মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটিকে বাওড়া মসজিদ নামেই জানেন স্থানীয়রা। তবে কোন সময় কে মসজিদটি নির্মাণ করেছেন সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেন না।

চারশ’ বা তার বেশি সময় আগে মসজিদটি নির্মিত বলে স্থানীয় মুরুব্বিদের অনেকেই মত প্রকাশ করেন। তবে কবে, কখন নির্মাণ হয়েছে এ বিষয় নিদিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারেননি। একজন বলেন, লোকমুখে শুনেছি মোঘল আমলে নির্মাণ হয়ে থাকতে পারে। গত দশ বছর আগেও বাওড়া গ্রামের মানুষ এই মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন।

মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান জানান, সরকারি কোন পৃষ্টপোষকতা না পাওয়ায় মসজিদটি বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। মসজিদটি দ্রুত সংরক্ষনের প্রয়োজন।

লালপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইসহাক আলী জানান, বাওড়ার এই ঐতিহাসিক মসজিদটি সংরক্ষনের জন্য সব ধরনের উদ্যোগসহ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুুল বাণীন দ্যুতি জানান, উপজেলায় এ ধরনের মসজিদ বা পুরাকৃর্তির সন্ধান পাওয়ায় এগুলো পুনরুদ্ধার ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।

ঐতিহাসিক এই মসজিদটি দ্রুত সংস্কার ও রক্ষনাবেক্ষনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক স্থাপনা টিকিয়ে রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষর সুুদৃষ্টি কামনা করেন এলাকাবাসীর।

 

 
Electronic Paper