ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

উপকূলে কাঁকড়া খামার বন্ধের উপক্রম

খুলনা ব্যুরো
🕐 ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২১

উপকূলে কাঁকড়া খামার বন্ধের উপক্রম

করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে কাঁকড়া খামার নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে কাঁকড়া রপ্তানি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন কাঁকড়া খামারিরা। অব্যাহত লোকসানে ইতোমধ্যে বেশ কিছু খামার বন্ধ হয়েছে। আরও অনেক খামার বন্ধের উপক্রম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি সহায়তা ছাড়া এ মন্দা পরিস্থিতিতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন।

খুলনা অঞ্চলের কাঁকড়া খামারিদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, করোনায় গত বছরের মার্চে চীনে কাঁকড়া রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এতে দেশের বাজারেও কমে যায় দাম। বর্তমানে অনেক খামারি ব্যাংক ও এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে কোনো রকম খামার বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু দেশের বাজারে দাম না পাওয়ায় কাঁকড়া বিক্রি হচ্ছে না। ফলে দিনের পর দিন বাড়ছে ঋণের বোঝা। তবে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে উপকূলীয় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত এক হাজার ৬৩ জন কাঁকড়া চাষিকে সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। আর খামারিরা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত খামারির তুলনায় সরকারের এই সহায়তা অপ্রতুল। জানা গেছে, সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় সরকারি হিসাবে প্রায় দুই হাজারের বেশি কাঁকড়া খামার রয়েছে। এসব খামারের সঙ্গে জড়িত চাষির সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। রপ্তানি বন্ধ থাকায় খামারে চাষ করা অধিকাংশ কাঁকড়া মরে যাচ্ছে।

কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক বছর ধরেই নানা প্রকার রোগের কারণে চিংড়ি চাষে তেমন লাভ হয়নি। তাই অনেক খামারি কাঁকড়া চাষ শুরু করেন। লাভও হয়েছে বেশ। তবে করোনায় কাঁকড়া রপ্তানি বন্ধ ও দাম কমায় কাঁকড়া সময়মতো বিক্রি হয়নি। এক পর্যায়ে পুকুরেই কাঁকড়া মরে যায়। তবে করোনার প্রকোপ সামান্য কমতে থাকলে গত অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে ধার দেনা করে আবারও অনেক খামারি চাষ শুরু করে। কিন্তু উৎপাদিত কাঁকড়া সরাসরি চীনে না যাওয়ায় অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হয়। ফলে খামারিদের উৎপাদন খরচও উঠছে না।

তারা জানান, কাঁকড়া চাষ বন্ধ করেও খামারিরা ঋণের দায়ে ঘরে থাকতে পারছেন না। আর যারা এখনও টিকে আছেন তাদের অবস্থাও খারাপ। এই অবস্থায় চীনে সরাসরি কাঁকড়া রপ্তানি চালু করতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং বিনা সুদে ঋণ দিয়ে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার দাবি জানান খামারিরা।

কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রপ্তানিযোগ্য কাঁকড়া পাঁচটি গ্রেডে বিক্রি হয়। বর্তমানে প্রত্যেক গ্রেডের দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে কমেছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে ২০০ গ্রাম (ফিমেল) ওজনের কাঁকড়ার কেজি ছিল ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা, ওই কাঁকড়া বর্তমানে ৮০০ টাকা। ১৮০ গ্রাম ওজনের কাঁকড়া ছিল ১ হাজার টাকা, তা বর্তমানে ৬০০ টাকা।
খামরিরা জানান, সারা দেশে দুই লাখের বেশি মানুষ কাঁকড়া চাষের সঙ্গে জড়িত। কাঁকড়ার দাম কম হওয়ায় ইতোমধ্যে কাঁকড়ার হ্যাচারিতে খাদ্য দেওয়া বন্ধ করেছে অনেকেই।

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, তাদের কষ্টের কথা শুনেছি। চেষ্টা করছি তাদের বিষয়টি উপরমহলে জানানোর জন্য।

 
Electronic Paper