বেনাপোলে আমদানি-রফতানিতে ধীরগতি
যশোর প্রতিনিধি
🕐 ৫:০৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২১
ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতের প্রভাবে দেশের সর্ববৃহত্তম বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে নেমে এসেছে ধীরগতি। অন্যান্য দিন সকাল ৯টার মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে যথারীতি আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সচল ও পণ্য খালাসের কার্যক্রম শুরু হলেও ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে এখন যেন তা থমকে গেছে। ফলে ধীরগতি নেমে এসেছে বাণিজ্যে।
এর আগে স্বাভাবিক সময় প্রতিদিন ৪ শতাধিক ট্রাক পণ্য আমদানি ও দেড়শ ট্রাক পণ্য রফতানি হলেও গত দুই দিন ধরে ঘন কুয়াশায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় আমদানির সংখ্যা কমে এসেছে ৩ শতাধিকে। রফতানিও কমেছে অর্ধেকের কাছাকাছি।
গত মঙ্গলবার সকালে বন্দর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশায় রাস্তা ঢেকে আছে। সামনের কোন কিছুই চোখে দেখা যাচ্ছে না। পণ্যবহনকারী ট্রাক চালকরা হেড লাইট জ্বালিয়েও রাস্তায় চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। বন্দরের অফিসগুলোতেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকাংশের চেয়ার ফাঁকা। পণ্য খালাসের সঙ্গে জড়িত বন্দর শ্রমিকেরাও কর্মস্থলে আসছেন দেরিতে। সবকিছু মিলিয়ে বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রমে যেন স্থাবিরতা নেমে এসেছে।
পণ্য বহনকারী ট্রাক চালকেরা বলছেন, এর আগে যখন তারা ঢাকা বা তার আশপাশ এলাকা থেকে পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসতে সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগতো। তবে কিছুদিন হচ্ছে ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় সময় মত বন্দরে পৌঁছাতে পারছেন না। এছাড়া কনকনে শীত আর কুয়াশায় রাস্তায় গাড়ি চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। কখনো দ্বিগুণ সময় আবার দুইদিন পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। যানজটে বেড়েছে সিরিয়ালের নামে আরিচা-দৌলতদিয়া ঘাটে চাঁদাবজি। এতে অনেকে এ পথে পণ্য পরিবহন করতে চাইছে না।
এদিকে বন্দরে পণ্য খালাসের কাজ করছে দুটি সংগঠনের প্রায় দুই হাজার হ্যান্ডলিংক শ্রমিক। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ভোরে তাদের বন্দরে আসতে হয়। তীব্র শীতে বন্দরের দিন আনা দিন খাওয়া এসব শ্রমিকেরা শীত বস্ত্রের অভাবে কষ্ট পেতে দেখা গেলেও এখন পর্যন্ত বন্দর, কাস্টমস, বাণিজ্যিক বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেউ তাদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। ফলে কষ্টের মধ্য দিয়ে তাদের পণ্য খালাসের কাজ করতে হচ্ছে।
জানা যায়, দেশের সবগুলো স্থলপথে যে পরিমাণে পণ্য আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় তার প্রায় ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়ে। গত সোমবার দিনভর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ২৯৩ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে।
আমদানি পণ্যের মধ্যে শিল্পকারখানার কাচামাল, কেমিক্যাল, মেশিনারিজ দ্রব, তৈরি পোশাক, গার্মেন্টস, কসমেটিকস, শিশু খাদ্য, মাছ উল্লেখ্যযোগ্য। বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রফতানি হয়েছে ৯৪ ট্রাক। রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাট ও পাট জাত পণ্য, তৈরি পোশাক, কেমিক্যাল, মাছ, কাপড়ের টুকরা (ঝুট), টিস্যু, মেলামাইন। প্রতিদিন আমদানি পণ্য থেকে সরকারের ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়।