করোনায় ব্যবসা বদলের হিড়িক
যশোর প্রতিনিধি
🕐 ৪:৩০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২১
যশোরে বই ব্যবসায় ধস নেমেছে। করোনায় এ ব্যবসায়িদের পথে বসিয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ৭৮ জন ব্যবসায়ী তাদের বইয়ের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। আর শতাধিক কর্মচারী হয়েছেন ছাটাই ও বেতন হয়েছে অর্ধেক। এ কারণে বই ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পরিবারে এখন হাহাকার বিরাজ করছে।
তারা জানিয়েছেন, দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলা পর্যন্ত তাদের ব্যবসা সচল হবে না।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি যশোর জেলা সম্পাদক জাকির উদ্দীন দোলন বলেন, বই ব্যবসায় ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তারা বর্তমানে ঋণ নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। এ অবস্থায় চলতে না পেরে তারা ইতিমধ্যে ৭ জন কর্মচারীকে বিদায় জানিয়েছেন। আরো কয়েকজন প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। বই ব্যবসায়ীরা ভয়াবহ এ পরিস্থিতিতে সরকারি কোন অনুদান বা প্রণোদনা পাননি। তিনি নিজে শহরের কয়েকটি প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকে দৌড়ঝাঁপ করেও প্রণোদনার ঋণ পাননি।
সূত্রে জানা যায়, শহরের দড়াটানা মোড় থেকে হযরত গরিবশাহ মাজার পর্যন্ত বই মার্কেট ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন। এরপর থেকেই মূলত বই ব্যবসায়ীদের কপালে শনিরদশা ভর করে। পরে তাদের শহরের মুসলিম একাডেমি স্কুল চত্বরে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। সেখানেই পরবর্তীতে গড়ে ওঠে বই মার্কেট। নতুন করে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসায়ীরা ২০২০ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে বইয়ের ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু এতেও তাদের শনিরদশা কাটেনি।
ব্যবসায়ীরা আশা করছিলেন, নতুন এ বই মার্কেটে তাদের ব্যবসা ভালোভাবে চলবে। অথচ কিছুদিন যেতে না যেতেই তাদের আশায় ছাই পড়ে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ও ১৮ মার্চ এ রোগে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপর এ মাস থেকেই দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে নতুন স্থানে দু’মাস ব্যবসা যেতে না যেতেই তাদের দোকানে করোনার প্রভাব পড়ে। এক পর্যায়ে তাদের দোকান বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোন পথ থাকে না।
সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
এদিকে, ব্যবসায় ধস নামা বই ব্যবসায়ীরা আজও ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। গত প্রায় এক বছরে বই ব্যবসা থেকে ঝরে গেছেন ৭৮ জন ব্যবসায়ী। বেঁচে থাকার জন্য তারা এ পেশা পরিবর্তন করে অন্য কাজে নিজেদের নিয়োজিত বলে ব্যবসায়ী সূত্র জানিয়েছে।