ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পদ্মার চরে মাসকলাই

শরীফুল ইসলাম, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)
🕐 ৬:০২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০২, ২০২০

পদ্মার চরে মাসকলাই চাষ করে এ বছর ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চাষিরা। ফলন ভালো হওয়ায় মনের আনন্দে কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অল্প খরচ ও কম পরিশ্রমে ডাল জাতীয় অর্থকরী এ ফসল চাষ করে সংসারে সচ্ছলতাও ফিরেছে দরিদ্র চরবাসীর। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ক্ষতিকর তামাক চাষ না করে মাসকলাই চাষে আরও বেশি আগ্রহী হবেন তারা।

কুষ্টিয়ায় চলতি মৌসুমে দুই হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা নদী বিধৌত দৌলতপুরের চরাঞ্চলে চাষ হয়ে দুই হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে মাত্র দুই হাজার টাকা আর ফলন হচ্ছে দুই থেকে তিন মণ।

বিনা পরিশ্রমে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে খরচ বাদ দিয়ে ৩২শ’ থেকে ৩৫শ’ টাকা মণ হারে বিক্রয় করে চাষিদের লাভ হচ্ছে সাত হাজার টাকা থেকে আট হাজার টাকা যা চাষিদের অর্থিক চাহিদা পূরণে সহায়ক বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুন্সীগঞ্জ গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার জানান, এবছর তার ৫ বিঘা জমিতে মাসকলাই চাষে খরচ হয়েছিল ১০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি তিন মণ হারে তার ১৫ মণ কলাই হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

চিলমারীর চরের ইকবাল হোসেন জানান, তিন বিঘা জমিতে আট মণ কালাই হয়েছে। খরচ বাদ দিয়ে প্রায় তিনগুণ লাভ হয়েছে। বিনা পরিশ্রমে এবং অল্প খরচে মাসকলাই চাষ কৃষকদের জন্য অর্থকরী ফসল হিসেবে বেশ উপকারী বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে চাষিদের কাছ থেকে ৮০ টাকা থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে মাসকলাই ক্রয় করে খুচরা বাজারে ১০০ টাকা দরে বিক্রয় করে চাষিদের পাশাপাশি খুচরা ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন মজিবর রহমান নামে এক খুচরা ব্যবসায়ী।

কৃষি বিভাগের পরামর্শের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আধুনিক ও উচ্চফলনশীল জাতের মাসকলাইয়ের বীজ সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়ায় এ বছর মাসকলাই চাষে ভালো ফলন হয়েছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সজিব আল মারুফ।

পদ্মার অনাবাদি চরে অর্থকরী ফসল মাসকলাই চাষের আওতায় আনা গেলে একদিকে যেমন চরের দরিদ্র চাষিদের মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব হবে, অপরদিকে আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

 

 

 
Electronic Paper