ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দখলে মরছে মরিচ্চাপ

ইব্রাহিম খলিল, সাতক্ষীরা
🕐 ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৮

এক সময়ের প্রমত্তা মরিচ্চাপ নদী এখন সরু নালায় পরিণত হয়েছে। নদীর দুই পাশ দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে ঘরবাড়ি, ঘের, ইট ও ভাটাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। নদীটির সিংহভাগই এখন দখলদারদের কবলে। এতে নাব্যতা হারিয়ে নদীটি এখন মৃতপ্রায়।

স্থানীয়রা জানায়, বছর সাতেক আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নদীটি খননের কাজ করা হয়। ওই সময় অপরিকল্পিকতভাবে মাটি নদীর মধ্যেই ফেলে বেড়িবাঁধ উঁচু করা হয়। খননের সময় নদীর ভেতর থেকে মাটি তুলে নদীর দুই ধারের ১০ মিটার উঁচু করায় ১০ মিটারের বাইরে নদীর যে জায়গা ছিল তা দখল হয়ে যায়। এখন নদীটি কোথাও কোথাও সরু নর্দমায় পরিণত হয়েছে। এছাড়া ষাটের দশকে নদীটির বাঁকে অপরিকল্পিতভাবে স্লুইসগেট করায় খালগুলোর পানি প্রবেশ ও পানি বের হতে না পারায় জোয়ারে আসা পলি নদীর বুকে জমে নাব্যতা হারায়।
এল্লারচর এলাকার গৌতম দাস জানান, মরিচ্চাপ ছিল আমাদের প্রাণ। এখনকার নদী আর আগের নদী কল্পনা করলে রূপকথা মনে হয়। নিজেরই বিশ্বাস হয় না এখানে এতো বড় নদী ছিল। নদীতে জোয়ার ভাটা হতো। প্রচুর স্রোতে ছিল। নদীতে নামতেই ভয় লাগত। যখন নদীতে বান আসত তখন অনেক দূর থেকে শব্দ শোনা যেত। এল্লারচরে স্টিমার ঘাট ছিল। আমরা এটা দিয়ে পার হয়ে শহরে যেতাম। আবার নৌকায় করে সায়ের খাল হয়ে শহরের যেতাম। নদীতে বড় বড় লঞ্চ-স্টিমার চলত। আমাদের বাপ-দাদারা নদী দিয়ে কলকাতা ও খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা করতে যেতেন। সাতক্ষীরা নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতা অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী জানান, মরিচ্চাপ নদীটি দখল হয়ে গেছে। এটা এখন মরা খাল। এটা রক্ষায় তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। নদী দখল মুক্ত করতে নদীর জায়গা মাপ করা দরকার। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এটা কখনো করেনি। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, নদীর পাড়ের জমি আমাদের না। এটা জেলা প্রশাসনের আওতায়। তাই এ জায়গা রক্ষা করার দায়িত্ব তাদের। তবে আমরা নদীটি খননের জন্য প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।

 
Electronic Paper