ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক্লিনিকের আড়ালে মাদক কারবার

খুলনা ব্যুরো
🕐 ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০২০

খুলনায় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল মাদক ব্যবসা। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কেন্দ্রীয় এক কাউন্সিলরের দাপটে মুখ খুলছিল না কেউ। সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক অভিযানে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ওই চিকিসকের অপরাধ। হেলথ গার্ডেন নামের প্রাইভেট ক্লিনিকে তার নিজস্ব চেম্বার থেকে জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণের মাদক। এ সময় গাঁজা সেবনরত অবস্থায় তার নারী সহযোগীকে করা হয় আটক, দেওয়া হয় অর্থদ-সহ সাত মাসের জেল। সেখানেই ধরা পড়েন আরও এক ইয়াবা বিক্রেতা। যদিও পলাতক আছেন মূল হোতা ডা. সুমন রায়। এ ঘটনায় সোনাডাঙ্গা থানা করা হয়েছে মামলা। সিলগালা করা হয়েছে ক্লিনিক। মামলাটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর তদন্ত করবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক।

জানা গেছে, হেলথ গার্ডেন প্রাইভেট ক্লিনিকে ডা. সুমন রায়ের চেম্বারে গত সোমবার সন্ধ্যায় অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। মামলার এজাহারে বলা হয়, ডা. সুমন রায় ও আসাদুজ্জামান হিরা পরস্পরের সহযোগিতায় বিক্রির উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও গাঁজা সংরক্ষণ করে।

গোয়েন্দা অনুসন্ধানের মাধ্যমে নগরীর ছোট বয়রা এলাকায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে হেলথ গার্ডেন নামের ক্লিনিকে ওই ডাক্তারের নিজস্ব চেম্বার থেকে আনুমানিক ৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকার এক হাজার ৬৫০ পিস ইয়াবা, তিন হাজার টাকার গাঁজা ও নগদ এক লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক ও এস এম রাসেল ইসলাম নূর এই অভিযান পরিচালনা করেন। সুমনের সহযোগী অথৈকে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় আটক করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক ওই নারীকে গাঁজা সেবনের দায়ে সাত মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করেন। একই সঙ্গে চেম্বার সিলগালা করেন।

একটি সূত্র জানায়, ডা. সুমন রায় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) খুলনা জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) খুলনা জেলা শাখার প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক এবং বিএমএ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলর। সিলগালা করা ক্লিনিকের মালিকানা আছে। তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে রোগী ভাগিয়ে নেওয়া ও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগে সম্প্রতি তাকে বদলি করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রাইভেট ক্লিনিকে তার চেম্বার থেকে মিলল মাদক ও নগদ অর্থ।

সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, ডা. সুমন রায় এবং তার সহযোগী আসাদুজ্জামান হিরার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে সুমন রায়কে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি। গ্রেফতার হিরা এবং দণ্ডপ্রাপ্ত অথৈকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর তদন্ত করবে বলেও উল্লেখ করেন ওসি।

 
Electronic Paper