ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাতাসে ভর করে চলছে যশোর জেলা শ্রমিক লীগ

বি এম ফারুক, যশোর
🕐 ৯:০০ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০

বাতাসে ভর করে চলছে যশোর জেলা শ্রমিক লীগ। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পাল্টাপাল্টি অব্যাহতির কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবির হয়ে পড়েছে। দুটি বলয়ে বিভক্ত নেতাকর্মীদের মাঝে নেই কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম। শুধু তাই নয়, দুটি বলয়ই জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার আশ্রিত হওয়ার কারণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে সাধারণ নেতাকর্মীদের অভিযোগ। এছাড়া শ্রমিক লীগ এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ঘায়েল করতে রাস্তা-ঘাটে কুৎসা রটাতে ব্যস্ত।

আর এতে সংগঠনটির তৃণমূল পর্যায়ে নড়বড়ে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর মাসে সালে যশোর ঈদগাহ মাঠে জেলা শ্রমিক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে আজিজুর রহমান সভাপতি ও নাসির উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সে সময়ের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটির অনুমোদন দেয়। সে সময় সভাপতি ও সম্পাদক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের পক্ষীয় ছিলেন।

পরবর্তীতে শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন যশোর সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের পক্ষ অবলম্বন করেন। ২০১৯ সালে ৯ অক্টোবর জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনকে অব্যাহতি দেয় সভাপতি আজিজুর রহমান পন্থীরা। এ সময় আসাদুজ্জামান বাবলুকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আজিজুর রহমানকে অব্যাহতি দেয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন পন্থীরা। অব্যাহতি পাল্টা অব্যাহতির কারণে সংগঠনটির সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবির হয়ে পড়ে।

সূত্র মতে, সাংগঠনিক কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন মাহমুদ বলেন, শ্রমিক লীগের কেরাবেরা অবস্থা। কোনো কর্মকা- নেই। শ্রমিক লীগ শ্রমিকদের কোনো কল্যাণে আসে না। আজিজ ভাই ও নাসির ভাই দুই জন দুই গ্রুপে নেতৃত্বে দেয়। তারা যা করে তা সবই গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।

ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, সংগঠনের সেক্রেটারি নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে পার্টি অফিস বিক্রি, দলের পদ দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়া, মানুষের চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়াসহ অন্তত ১৫-১৬টি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্রের ধারা অনুযায়ী তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যার রেজুলেশন কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠিয়েছি। কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার কারণে তার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ২০০৯ সালেও তাকে একবার বহিষ্কার করা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, দলীয় পদ ব্যবহার করে নাসির উদ্দিন সবসময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালায়।

আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, শিক্ষা বোর্ডে শতাধিক পদ খালি রয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যানের সঙ্গে আঁতাত করে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। নাসির সাহেব প্রায় প্রতিদিনই শিক্ষা বোর্ডে যান। চেয়ারম্যানের সঙ্গে খোসগল্প করে আসেন।

সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম জিরো। আমি বহুত চেষ্টা করেছি সংগঠনের কার্যক্রম গতিশীল করতে। কিন্তু সভাপতি আজিজ একজন মেরুদণ্ডহীন মানুষ। সে নিজের বুদ্ধিতে কোনো কাজ করতে পারে না। কোনো কাজ করতে হলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের অনুমতি ছাড়া সে কোনো কাজ করতে পারে না।

সভাপতি আজিজুর রহমান বলেন, নাসির সাহেবের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। পার্টি অফিস বিক্রি, মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া, পদ ব্যবহার করে দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করাই তার কাজ। আমার এসব ভালো লাগে না। এ কারণে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছি। সব ঝামেলা ঝঞ্ঝাট। বড় দলে বড় গ্রুপিং।

 
Electronic Paper