ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

টেনিস বলের পরিবর্তে চার কন্টেইনার আফিম!

আবুল হাসান, মোংলা
🕐 ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৪, ২০২০

মোংলা বন্দর জেটিতে ঘোষণা বহির্ভূত আমদানি নিষিদ্ধ চার কন্টেইনার আফিম (পোস্তদানা) জব্দ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এই আফিম জব্দ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. হোসেন আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নিষিদ্ধ এই পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার আয়শা ও তাজ ট্রেডার্স এবং স্থানীয় শিপিং এজেন্ট খুলনার মেসার্স ওশান ট্রেড লিমিটেডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আফিম জব্দের বিস্তারিত বিষয়ে তিনি বলেন, টেনিস বল আমদানির কথা থাকলেও আমদানিকারকরা আফিম আনছেনÑ এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে (আমদানি পণ্য নম্বর-২০২০/৫৩৫) নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ করা হয়েছে। মোংলা বন্দরের ২ নম্বর জেটিতে আমদানিকৃত ২০ ফিটের চারটি কন্টেইনারে করে (নম্বর-গজকট-৭৮১৮২৭১, গজকট-৮১১৭৭০০, গজকট-১১৭০৯৯৬ ও গজকট-৬৭৯৩৫১৭) এই আফিম আনা হয়।

মোংলা বন্দরের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার মো. সোহাগ জানান, আমদানি নিষিদ্ধ এই পণ্য নিয়ে গত ১০ আগস্ট সাইপ্রাসের পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি স্যানজোর্জিও’ মোংলা বন্দরের জেটিতে আসে। জাহাজটিতে থাকা ৩১৭টি কন্টেইনারের মধ্যে চারটি কন্টেইনারে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য আফিম (পোস্তদানা) ছিল। এমন গোপন সংবাদে জাহাজটি বন্দর জেটিতে আসার আগেই পণ্যবাহী কন্টেইনার আটক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর ১০ আগস্ট বন্দর জেটিতে আসার পরেই ২০ ফিটের (গজকট-৭৮১৮২৭১, গজকট-৮১১৭৭০০, গজকট-১১৭০৯৯৬ ও গজকট-৬৭৯৩৫১৭) কন্টেইনারগুলোকে সংরক্ষিত করে রাখা হয়। দুপুরে এসব কন্টেইনার খুলে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

মোংলা বন্দরে আসা জাহাজ ‘এমভি স্যানজোর্জিও’ স্থানীয় শিপিং এজেন্ট মেসার্স ওশান ট্রেড লিমিটেডের খুলনার সহকারী ম্যানেজার মো. মেহেদি হাসান বলেন, আমরা শুধু ওই জাহাজে থাকা কন্টেইনারগুলো আমদানি করেছি, তবে কন্টেইনারের মধ্যে কি পণ্য ছিল তা আমরা জানতাম না। এটা ওই কন্টেইনারে পণ্য আমদানিকারকরাই ভালো বলতে পারবেন।

তবে পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার মেসার্স তাজ ট্রেডার্সের মালিক মো. সাব্বির হোসেন দাবি করেন, দেশে আসা পণ্য তিনি আমদানি করেননি, তিনি টেনিস বল আমদানির জন্য টাকা পাঠিয়েছেন। সাব্বির হোসেন আরও বলেন, এটা ভুল করে মালয়েশিয়ার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিউসাইন করপোরেশন পাঠিয়ে থাকতে পারে। কারণ ওই প্রতিষ্ঠান টেনিস বল বিক্রির পাশাপাশি পোস্তদানাও বিক্রি করে।

অপর পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আয়শা ট্রেডার্সের মালিক মো. আকবর হোসেনের ফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্সের নেতা মো. কবির হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পণ্য আমদানিকারদের বক্তব্য হাস্যকর, এটা পুরোই নাটক। তারা মোংলা বন্দরের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এসব পণ্য আমদানি করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

এদিকে মোংলা কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার মো. শামসুল আরেফিন খান জানান, প্রাথমিকভাবে তাদের কাছে মনে হয়েছে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য বন্দর জেটি থেকে বের করে দিতে নিরাপত্তা কর্মীরাই সহায়তা করতেন।

 

 
Electronic Paper