বিপাকে আম চাষিরা
শিশির কুমার সরকার, বেনাপোল (যশোর)
🕐 ৩:১৪ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০২০
যশোরের বেনাপোলসহ শার্শা উপজেলায় চলতি মৌসুমে আম পাকা শুরু হয়েছে। এখন করোনার কারণে পরিবহন সংকটে সঠিকভাবে পাকা আম বাজারজাত করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পরিবহন সংকট কাটিয়ে ব্যবসায়ীরা আম কিনলে ও কৃষকরা তাদের আম বিক্রি করতে পারলে ন্যায্যমূল্য পাবে এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।
এদিকে, বাজার কমিটি দাবি করে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে জেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টিন নিশ্চিতের পর তাদের আম কেনার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
চলতি বছর শার্শা উপজেলায় ৫৭০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলা ও যশোর জেলার শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার মিলনস্থল শার্শার কায়বা ইউনিয়নে অবস্থিত বাগুড়ী বেলতলা বাজারে প্রায় ৪৫০০ হেক্টর জমির আম আমদানি হয়। ঢাকা শরিয়তপুর চাপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক হাজার পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখানে আসে আম কিনতে। প্রতিদিন এ বাজার থেকে অন্যান্য বছর ১/২’শ ট্রাক আম লোড হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেত। কিন্তু এবছর করোনার কারণে দুর দুরান্তের ব্যবসায়ীরা পরিবহন সংকটে কম আসায় আম পাড়তে না পেরে গাছে আম পেকে নষ্ট হচ্ছে।
তাছাড়া প্রথমদিকে দেশের কিছু অসাধু পাইকারী ব্যাপারীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে অপরিপক্ক আম কিনে ঢাকা চিটাগাংসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানোর পথে প্রশাসন ট্রাক আটক করে আম নষ্ট করে দিচ্ছে। প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পাকা গোবিন্দ শরীখাষ বোম্বাই আম বাজারজাত করা হচ্ছে। আম পাড়তে না পারায় ও খরিদ্দার কম হওয়ায় কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয় আমচাষি আহম্মদ আলী বলেন, ব্যবসায়ীরা ঠিকমত গাড়ীর জন্য আসা যাওয়া না করতে পারার জন্য তারা আম কিনতে পারছে না।
আমাদের বাজারে বাইরের থেকে খরিদ্দার কম আসছে যার কারণে আমের দাম কম। করোনার কারণে গাড়ীর একটা বড় সংকট দেখা দিয়েছে। গাছে আম পেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং আমরাতো আর পাকা আম গাছে রাখতে পারছিনা।
ঢাকার ব্যবসায়ী খোকন বলেন, করোনার কারণে পরিবহণ সমস্যা হচ্ছে। আমি গতকাল যে গাড়ী লোড দিয়েছি তা এখনও ফেরি পার করতে পারিনি। বাজারে আসলে এখানকার বাজার কমিটির নির্দেশনায় ১৪দিনের হোম কোয়ারান্টিন মেনে চলি। ১৪দিনের হোম কোয়ারান্টিন করার দুদিন পর কমিটির অনুমতি নিয়ে আমরা বাজারে আম কিনছি। এখন আমাদের পরিবহন সমস্যার সমাধান করতে পারলে ভাল হয়।
শার্শার বাগুড়ী বেলতলা আম বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মিলন বলেন, করোনার কারণে যানবাহনের জন্য আমরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। দুর দুরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা কম আসছে এবং তাদের পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে। করোনা সম্পর্কে সরকারি নির্দেশনা মেনে হোম কোয়ারান্টিনে রেখে ব্যবসায়ীদের বাজারে আসা নিশ্চিত করেছি।
৭নং কায়বা ইউপি চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ আহমেদ টিংকু বলেন, বাজারে ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখার স্বার্থে করোনা প্রতিরোধে হোম কোয়ারান্টিন নিশ্চিতে কমিটি মেম্বরদের নির্দেশ দিয়েছি। তারা তদারকি করছে এবং আশা করি তারা কোয়ারান্টিন মেনে ব্যবসা করবে।