ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মোংলা বন্দরে জাহাজ আসছে কম, কর্মহীন হাজারো শ্রমিক

আবুল হাসান, মোংলা (বাগেরহাট)
🕐 ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ০৪, ২০২০

করোনা ভাইরাসের কারণে মোংলা বন্দরে জাহাজ আগমন ও নির্গমের সংখ্যা কমে গেছে। যার প্রেক্ষিতে এখানকার জাহাজ ও জেটিতে পণ্য ওঠানামার সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ ভিত্তিতে কাজ করা এসব শ্রমিকরা কাজের অভাবে এখন পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো সহায়তা দেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

অপরদিকে কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রাথমিক কোনো উপকরনও দেওয়া হচ্ছে না। সরকারি ও বেসরকারী সংস্থা থেকে কিছু সহযোগিতা শ্রমিকরা পেলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।

বন্দরের হারবার ও ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের আগে এখানে কর্মরত প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কর্মচারী ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ ভিত্তিতে জাহাজ ও জেটিতে পণ্য খালাস কাজ করে মোটামুটিভাবে ভালোই সংসার চালিয়ে আসছিলেন। সে সময় মোংলা বন্দরে প্রতিদিন গড়ে ১৫-১৬টি জাহাজের অবস্থান থাকতো। সেই সঙ্গে বন্দর জেটিতেও কিছু পণ্য ওঠানামা করতো। কিন্তু করোনার কারণে বন্দরে এখন গড়ে প্রতিদিন ১০-১১টি জাহাজ আসছে। পাশাপাশি কমে গেছে বন্দর জেটির অভ্যন্তরের অনেক কাজ।

মোংলা বন্দর শ্রমিক কর্মচারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সেন্টু জানান, জাহাজ আগমনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ ভিত্তিতে কাজ করা এসব শ্রমিক কর্মচারীর কাজ অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় অনেকটা কর্মহীন থাকায় শ্রমিক কর্মচারীরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপজেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ, কোস্টগার্ড, নৌ বাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু ত্রাণ ও সহযোগিতা শ্রমিকদের দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ও স্টিভিডোরস কোম্পানি মেসার্স নূরু অ্যান্ড সন্সের মালিক এইচ এম দুলাল করোনা কারণে শ্রমিক কর্মচারীদের কাজ কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ অবস্থায় শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও কাজ কমে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে লোকসানের মুখে পড়ছেন তারা। অফিস স্টাফদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেওয়া হচ্ছে। তিনি বিভিন্ন সংস্থা থেকে কর্মহীন শ্রমিক ও সাধারণ মানুষদের যে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শেখ মো. আবুল কালাম আজাদ শ্রমিকদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শ্রমিকদের মালিক বন্দর কর্তৃপক্ষ নয়, তারা স্টিভিডোরসদের (ঠিকাদার) অধীনে কাজ করে। ঠিকাদারই তাদের দেখভাল করে থাকেন। কাজ থাকলে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রাথমিক উপকরণ প্রদানের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। করোনা দুর্যোগে বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেতে শ্রমিকদের কোনো সহায়তা করা যায় কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

 
Electronic Paper