বেনাপোলে বাড়ছে স্বর্ণ পাচার
আড়ালেই থাকছে মূলহোতারা
শিশির কুমার সরকার, বেনাপোল (যশোর)
🕐 ৩:৩৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে যশোরের বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্ত ব্যবহার হওয়ায় বেড়েছে স্বর্ণ পাচার। ভারতে স্বর্ণের দাম বেশি হওয়ায় বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধপথে স্বর্ণ পাচার ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। চোরাকারবারীরা এখন যশোরের রুদ্রপুর, গোগা, অগ্রভূলাট, পুটখালী, দৌলতপুর, গাতিপাড়া, বড়আঁচড়া, সাদিপুর, রঘুনাথপুর, ঘিবা, ধান্যখোলা, শিকারপুর, নারিকেলবাড়িয়া, শালকোনা, কাশিপুর সীমান্ত পথ দিয়ে ভারতে পাচার করছে স্বর্ণ।
বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি ও টহল ব্যবস্থা জোরদার করায় প্রায়ই স্বর্ণ পাচারকারীরা আটক হলেও পর্দার আড়ালে থেকে যায় গডফাদাররা। কম সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়িয়ে পড়েছে চোরাচালান ব্যবসায়। ফলে প্রকৃত চোরাকারবারীরা আটক না হওয়ায় চোরাকারবারীরা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের ব্যবসা।
গত দুই মাসে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত পথে ভারতে পাচারের সময় ১১ কোটি ৬ লাখ ১৫ হাজার ৬১৮ কেজি ৮৪০ গ্রাম স্বর্ণের বার এবং সাত পাচারকারী আটক হয়েছে। পাচারকারীরা প্রশাসনের হাতে ধরা পড়লেও তারা শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে এসব স্বর্ণ নির্দিষ্ট স্থানে বাহক হিসেবে পৌঁছে দিয়ে থাকে। পাচারকারীরা প্রকৃত মালিকের নাম প্রকাশ করতে নারাজ।
পুলিশের রিমান্ডে বেশি জেরা করলেই তারা ভারতীয় কোনো এক নাগরিকের নাম প্রকাশ করে থাকে। পরে প্রকৃত মালিকরা ধরা পড়া এসব আসামিদের নেপথ্যে থেকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন করে থাকেন। আটক আসামিরা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পুনরায় ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
ভারতে পাচারকালে সর্বশেষ ৮ ফেব্রুয়ারি বেনাপোল সীমান্তের বড় আচড়া ভাঙার মোড় থেকে ৩০টি স্বর্ণের বারসহ ইকবাল হাসান (৩৪) এবং ওমর ফারুক রনি (৩৪) নামে দুই পাচারকারীকে আটক করেন বিজিবি সদস্যরা। উদ্ধারকৃত সোনার ওজন তিন কেজি ৪৯৪ গ্রাম। যার বাজার মূল্য দুই কোটি ১৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০০ টাকা।
২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক মঞ্জুর-ই-এলাহী বলেন, চোরাচালান রোধে সীমান্ত এলাকার জনগণকে সচেতন করে রাখছি। এলাকায় টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক সেলিম রেজা বলেন, গোয়েন্দা নজরদারির বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান দমনে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।