ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জরাজীর্ণ ভবনে নষ্ট হচ্ছে বই

মো. জামাল হোসেন, খুলনা
🕐 ৩:৪৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০

খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার অর্ধশত বছর বেশি অতিবাহিত হলেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। গণগ্রন্থাগার ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলে ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। ভবনের ভেতরের দেয়ালগুলো স্যাঁত সেঁতে হয়ে পড়েছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে গণগ্রন্থাগারের বই। পাশাপাশি লোকবল সংকটের কারণে বই যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে না।

গ্রন্থাগার সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৪ সালে খুলনা নগরীর খালিশপুর থানার বয়রা এলাকায় খুলনা-যশোর মহাসড়কের পাশে একটি দোতলা ভবনে প্রায় আড়াই একর জমির ওপর গণগ্রন্থাগারটির কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং সব শ্রেণি-পেশার মানুষ গণগ্রন্থাগারটি পড়াশোনার জন্য ব্যবহার করে আসছেন। গণগ্রন্থাগারের আওতায় ১০টি জেলা সরকারি গ্রন্থাগারের প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে অবকাঠামো এবং জনবলসংকটসহ নানা সমস্যার শিকার এ গণগ্রন্থাগারটি। এখানে ২৮ জনের স্থলে কর্মরত আছেন ১৩ জন।

বই আদান-প্রদান ও সংরক্ষণসহ সকল কার্যক্রম এখনও সনাতন পদ্ধতিতে চলছে। আর এ কারণে অনেক বই নষ্ট হচ্ছে। ক্যাটালগে বই আছে অথচ বাস্তবে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এসব কারণে গবেষক, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ লাইব্রেরি ব্যবহারকারীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। তাছাড়া লাইব্রেরির বহু বই পুরাতন হওয়ায় মলাটের নাম মুছে গেছে। ফলে প্রয়োজনীয় বই খুঁজে বের করা সম্ভব হচ্ছে না। এ লাইব্রেরিতে প্রতিমাসে প্রায় পাঁচশত পাঠক-পাঠিকা উপস্থিত থাকে।

সূত্র বলছে, গণগ্রন্থাগার একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ সরকারি এ পাবলিক লাইব্রেরি ব্যবহার করতে পারে বলে এটিকে ‘জনগণের বিশ্ববিদ্যালয়’ বলা হয়। এখানে রয়েছে শিশু-কিশোর বিভাগ, রেফারেন্স বিভাগ ও সাধারণ বিভাগ। সাহিত্য, বিজ্ঞান, গবেষণা, ইতিহাস, কাব্যগ্রন্থ, সাধারণ জ্ঞান, ধর্মীয় গ্রন্থ ও সাধারণ গ্রন্থসহ বিভিন্ন বিষয়ের এক লক্ষ চল্লিশ হাজার বই এ লাইব্রেরিতে রয়েছে। এছাড়া এখানে জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও ত্রৈমাসিক পত্র-পত্রিকা রাখা হয়। শুধু বইপাঠের ব্যবস্থা নয় এখান থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রমও পরিচালনা করা হয়ে থাকে।

সরেজমিন দেখা যায়, ভবনটির দেয়াল স্যাঁত সেঁতে হয়ে পড়েছে। গণগ্রন্থাগারের মধ্যে রাখা বইগুলোর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ধুলা জমে রয়েছে বইগুলোর ওপর। অধিকাংশ চেয়ার- টেবিল ফাঁকা পড়ে রয়েছে। দোতলায় নতুন বইয়ের স্তুপ। কিন্তু ক্যাটালগ তৈরি না হওয়া বইগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি।

খুলনা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের উপ-পরিচালক বিভাগীয় সরকারি ড. মো. আহছান উল্যাহ্ বলেন, সমস্যাগুলো লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এরই মধ্যে ভবনের স্থাপত্য নকশার জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। স্থাপত্য অধিদফতরের নকশার পর জানা যাবে কবে থেকে নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে।

 
Electronic Paper