ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গড়াইয়ের ভাঙনে আশ্রায়ণ প্রকল্প

দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া
🕐 ৯:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২০

শুষ্ক মৌসুমে সামান্য পানি প্রবাহেই তীব্র ভাঙ্গনে কবলে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার হেলালপুর আশ্রায়ন প্রকল্পসহ জনপদ। পূর্ব থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় এখানে প্রতিরক্ষা গ্রোয়েনও করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেটিও এখন বিপন্ন অবস্থায়।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতিবছর তীর সংলগ্ন এসকেবি ইটভাটার মাটি কাটার কারণে এই ভাঙনের সৃষ্টি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তীব্র ভাঙন ঠেকাতে ইতোমধ্যে অস্থায়ী ভিত্তিতে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। তবে আক্রান্ত স্পটটি রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা জরুরি মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।

খোকসা উপজেলার হেলালপুর সরকারি আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা সুফিয়া খাতুন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে আকস্মিক গড়াই নদীর পার ভেঙ্গে আমরা এখন চরম বিপন্নের মুখে। এখানে ৩৫টি পরিবারের সবাই সহায় সম্বলহীন উদ্বাস্তু। প্রতিবছর নদীর ভিতরে এবং সংলগ্ন তীর থেকে ইটভাটার মাটি উত্তোলনের কারণে নিচু হয়ে যাওয়ায় পানি ঢুকে সৃষ্টি হয়েছে এই ভাঙ্গন। এই ভাঙ্গন বন্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে আমরা যে ভাসমান উদ্বাস্তু ছিলাম আবার তাই হয়ে যাবে সবার অবস্থা।

ঘটনাস্থলে জরুরি বালির বস্তা ডাম্পিং কাজ দেখ-ভালের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৪ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই ভাঙনে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একদিকে নদীর মাঝখানে চর জেগে পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সেখান থেকে প্রবাহমুখের দিক পরিবর্তন, অন্যদিকে নদী তীর থেকে মাটি উত্তোলনের ফলে নিচু হয়ে যাওয়ায় পানি ঢুকে এই স্থানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জায়গাটি পূর্ব থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলে এখানে একটা গ্রোয়েনও করা হয়েছিল খোকসা উপজেলা শহর রক্ষায়। সেটাও এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ভুক্তভোগীদের করা মাটি উত্তোলনের অভিযোগ বিষয়ে এসকেবি ইটভাটার ব্যবস্থাপক গণেশ কুমার বলেন, জমিটি তাদের নিজস্ব মালিকানা সম্পত্তি, সেজন্য এখান থেকে মাটি উত্তোলন করে।

খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী জেরীন কান্তা বলেন, গড়াই নদীর পার ভেঙ্গে আশ্রায়ন প্রকল্প, খোকসা শহর রক্ষাবাঁধসহ জনপদ চরম ঝুঁকির মুখে পড়ায় তাৎক্ষণিক ভাঙ্গন ঠেকানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। সেখান থেকে যাতে আর কেউ অপরিকল্পিত মাটি খনন বা উত্তোলন করতে না পারে সেবিষয়েও পদক্ষেপ নেয়া হবে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, গড়াই নদীর বাম তীরবর্তী খোকসা উপজেলার হেলালপুর আশ্রায়ন প্রকল্প, শহর রক্ষাবাধসহ গোটা এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা ও জনপদ চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এমুহুর্তে বালির বস্তা ফেলে তাৎক্ষণিক ভাঙন মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে তবে আগামী বর্ষা মৌসুমে আক্রান্ত এই জায়গাটি রক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নচেৎ নদীর মরফোলজিক্যাল চেঞ্জের ফলে ওইখানে নদীর টানির্ং পয়েন্ট জনপদে ঢুকে পড়তে পারে।

 
Electronic Paper